শত্রুঘ্ন সিনহা।
বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে শত্রুঘ্ন সিন্হার তোপ নতুন নয়। ভুয়ো সংঘর্ষ মামলার বিচারপতির রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলতেও পিছপা হলেন না তিনি। দিল্লিতে আজ এক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে শত্রুঘ্ন বললেন, ‘‘বিদ্বজ্জন তো বটেই, এখন বিচারপতিদেরও হত্যা হচ্ছে!’’
ঘটনাটি কী? গুজরাতে অমিত শাহ যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, সেই সময় সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায়। সিবিআই তাঁকে অভিযুক্ত করে। অমিত গ্রেফতারও হন, পরে জামিন মেলে। মামলা স্থানান্তরিত হয় মুম্বইয়ে। বিশেষ সিবিআই আদালতে তখন বিচারপতি ছিলেন ব্রিজগোপাল হরকিষেন লোয়া। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরপরই নাগপুরের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে লোয়ার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। সম্প্রতি লোয়ার বোন ও বাবা সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ করেন, মুম্বই হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মোহিত শাহ ‘ইতিবাচক’ রায়ের জন্য ১০০ কোটি টাকা ঘুষ দিতে চেয়েছিলেন লোয়াকে। সে কথা মৃত্যুর আগে লোয়া পরিবারকে জানিয়েছিলেন।
নাগপুরে মৃত্যু, পোস্টমর্টেমের প্রক্রিয়া নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে লোয়ার পরিবার। লোয়ার মৃত্যুর পর নতুন যে বিচারপতি আসেন, তিনি দায়িত্ব নিয়েই রেহাই দেন অমিত শাহকে। সিবিআইও সেই রায়ের বিরুদ্ধে কোনও আবেদন করেনি।
ঘটনাটি নিয়ে ইতিমধ্যে মুখ খুলেছেন সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘খুন, ঘুষ, প্রতিষ্ঠানের কারচুপি, আইনকে খাটো করার মতো প্রশ্ন উঠেছে, যার তদন্ত হওয়া দরকার।’’ প্রশান্তর বক্তব্য, ‘‘বিচারপতির মৃত্যু ঘিরে ওঠা প্রশ্নের তদন্ত সুপ্রিম কোর্টেরই করা উচিত।’’
গুজরাত ভোটের আগে অমিত শাহের বিরুদ্ধে এমন হাতে-গরম ইস্যু পেয়েও কংগ্রেস কিন্তু এখনও চুপ। কেন? দলের এক নেতার কথায়, ‘‘এখনই এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলে গোটা বিজেপি রে-রে করে উঠে বলবে, কংগ্রেস সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে আছে। তাই সতর্ক কংগ্রেস।’’ কিন্তু দলের মধ্য থেকেই শত্রুঘ্ন বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলে বিতর্কে অন্য মাত্রা যোগ করে দিলেন।