শশী তারুর। ছবি: পিটিআই
সপ্তাহখানেক বাদেই কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে মুখোমুখি দ্বৈরথে নামতে চলেছেন শশী তারুর ও মল্লিকার্জুন খড়্গে। খড়্গেকে গান্ধী শিবিরের প্রার্থী বলে তলে তলে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা কিছুটা হলেও সত্যি বলে দাবি করলেন তারুর। তবে তাঁর বিশ্বাস, তিনি ‘আন্ডারডগ’ হলেও, পিছিয়ে থেকেও প্রতিপক্ষকে মাত করে দেওয়ার শক্তি তাঁর রয়েছে।
দীর্ঘ ২২ বছর পরে গান্ধী পরিবারের বাইরের কোনও ব্যক্তিকে দলীয় সভাপতি হিসাবে বেছে নিতে ভোটাভুটিতে নামছে কংগ্রেস। দুই প্রার্থীর মধ্যে মল্লিকার্জুন খড়্গে কার্যত গান্ধী পরিবারের অঘোষিত প্রার্থী। অন্য দিকে দলে গান্ধী পরিবারের বিরোধী যে শিবির, তার প্রতিনিধি হিসাবে লড়াইয়ে নেমেছেন শশী। এ দিন মুম্বইয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, ‘‘খড়্গেকে গান্ধী পরিবারের প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। কিছু নেতা আমায় জানিয়েছেন, খড়্গেকে ভোট দেওয়ার জন্য তাঁদের চাপ দেওয়া হচ্ছে।’’
তবে এর পিছনে সনিয়া-রাহুল গান্ধীর কোনও ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন না শশী। তিনি বলেন, ‘‘গান্ধী পরিবার ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, তারা নিরপেক্ষ। তাঁদের কোনও প্রার্থীর প্রতি কোনও পক্ষপাত নেই। নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা বর্ষীয়ান নেতা মধুসূদন মিস্ত্রীও জানিয়ে দিয়েছেন, দলের পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে কোনও প্রার্থী দাঁড় করানো হয়নি। তিনি এ কথা একবার নন, তিন বার জানিয়েছেন।’’
খড়্গের তুলনায় দৌড়ে পিছিয়ে থাকলেও জেতার প্রশ্নে আশাবাদী শশী। আগামী দিনে কংগ্রেসের খোলনলচে পাল্টে দেওয়ার পিছনে তিনি অনুঘটকের কাজ করবেন বলে দাবি করে লোকসভার ওই সাংসদ বলেন, ‘‘অতীতে কংগ্রেস সফল ভাবে দেশ চালিয়েছে। মানুষ তথা বিভিন্ন দলের ভরসা জিতেছে। আমাদের সেই ভোটব্যাঙ্ক পুনরুদ্ধারে নামতে হবে। নিজেদের এমন ভাবে উপস্থাপিত করতে হবে যাতে জনগণ কংগ্রেসের উপরে আস্থা ফিরে পায়।’’
তবে সভাপতি নির্বাচনে জেতা-হারার ঊর্ধ্বে উঠে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে দলকে শক্তিশালী করে তোলাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য হতে চলেছে বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন শশী। তিনি বলেন, ‘‘দেশের মানুষ বিজেপির উপরে অখুশি। অর্থনীতি বিপর্যস্ত, মূল্যবৃদ্ধি ক্রমবর্ধমান, বেকারত্ব চরমে। এই পরিস্থিতিতে দেশ একটি শক্তিশালী বিকল্পের খোঁজে রয়েছে। আমাদের সেই শক্তিশালী বিকল্প হয়ে উঠতে হবে। আর দলকে সেই শক্তিশালী বিকল্প করে তোলাই হবে আমার অন্যতম লক্ষ্য। গত দু’টি নির্বাচন দল মাত্র ১৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত বাকি সেই আশি শতাংশের কাছে পৌঁছে শক্তিশালী বিকল্প হয়ে ওঠার বার্তা দেওয়া। একমাত্র তবেই বিজেপিকে দূরে রাখা সম্ভব হবে।’’