উত্তর-পূর্বে ঢোকার আগে শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী মহারাজ বলেছিলেন, গো-রক্ষার বার্তা প্রচারে তাঁকে আটকানো যাবে না। গো-রক্ষায় গুলিতে মৃত্যু হলেও পুণ্য। কিন্তু চার্টার্ড বিমানে অরুণাচল ও নাগাল্যান্ড পৌঁছেও বিমানবন্দর থেকে বেরোতে পারলেন না তিনি। আগামিকাল তাঁর শিলং যাওয়ার কথা। কিন্তু আজই এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়াকে চিঠি লিখে মেঘালয় সরকার অনুরোধ করেছে, শঙ্করাচার্যের বিমানকে যেন নামার অনুমতি দেওয়া না হয়। পূর্ব খাসি হিলের জেলাশাসক ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অধীনে সেখানে ১৬৩ ধারা জারি করে জানিয়েছেন, বিনা অনুমতিতে এই ধরনের কোনও যাত্রা করা চলবে না।
উত্তর-পূর্বের জনজাতি প্রধান রাজ্য নাগাল্যান্ড, অরুণাচল, মেঘালয়ে অভিমুক্তেশ্বরানন্দের গো-ধ্বজ যাত্রা নিয়ে বিতর্ক চলছে। কারণ সেখানে গোমাংস পছন্দের খাদ্য। নাগাল্যান্ডে সরকারই গো-ধ্বজ যাত্রার অনুমতি বাতিল করেছে। প্রতিবাদ চলছিল অরুণাচলেও। বৃহস্পতিবার দুই রাজ্যেই ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন অভিমুক্তেশ্বরানন্দ। কিন্তু অল অরুণাচল প্রদেশ স্টুডেন্টস’ ইউনিয়ন (আপসু)-র বিক্ষোভের জেরে ইটানগরের হলঙ্গি বিমানবন্দর থেকে বেরোতেই পারেননি তিনি। এডিসি, এসপি ও বিমানবন্দর অধিকর্তা অভিমুক্তেশ্বরানন্দকে লাউঞ্জে বসিয়ে বোঝান, তিনি বাইরে গেলে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা দেখা দেবে। কোনও পক্ষই তাঁর তরফে আলোচনার প্রস্তাব না মানায় শঙ্করাচার্য আবার অরুণাচলে এসে যাত্রা চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বিমানে ফিরে যান। এর পরে নাগাল্যান্ডেও একই বাধার মুখে পড়েন শঙ্করাচার্য। ২৮ সেপ্টেম্বর কোহিমায় তাঁর গো-ধ্বজ যাত্রা বাতিল করে রাজ্য সরকার তাঁকে ও সঙ্গীদের বিমানবন্দর থেকে বেরোতে দেয়নি। নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে কড়া ভিডিয়ো-বার্তা পাঠিয়ে বিকেলে গুয়াহাটি চলে আসেন তিনি। রাত উলুবাড়িতে কাটিয়ে আজ সকালে তিনি চলে যান।
শনিবার শিলংয়ে গো-ধ্বজ যাত্রায় অংশ নিয়ে তিনি গরুকে ‘দেশের মাতা’ ঘোষণা ও গো-হত্যা বন্ধে কেন্দ্রীয় আইন প্রণয়নের দাবি তুলবেন বলে জানিয়েছেন শঙ্করাচার্য। কিন্তু খাসিদের বিভিন্ন সংগঠন আগাম জানিয়েছে, এখানেও বিমানবন্দর থেকে তাঁকে বেরোতে দেওয়া হবে না। শিলংয়ের উমরয় বিমানবন্দরের সামনে আজও প্রায় ২ ঘণ্টা বিক্ষোভ চলে। বিকেলে জেলাশাসক আর এম কুরবা বিবৃতি দিয়ে জানান, ওই ধরনের সমাবেশে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে পারে। তাই ১৬৩ ধারা জারি করা হল।
শঙ্করাচার্য বলেন, “এ ভাবে মানুষকে প্ররোচিত করা, মারধর ও সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের হুমকি, গণতান্ত্রিক দেশে কাউকে কোথাও প্রবেশে বাধা দেওয়া বিভিন্ন ধারায় বেআইনি। আমি নিছক প্রচারের জন্য আসিনি। খোলা মনে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতেই আসতে চাই।”