জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশনের কাছে সিএএ-এনআরসি প্রতিবাদ। ছবি: এএফপি।
শাহিন বাগ আন্দোলনের ধাঁচে এ বার উত্তর-পূর্ব দিল্লির জাফরাবাদে রাস্তা অবরোধ করলেন দলিত সংগঠন ভীম সেনার প্রায় দেড় হাজার প্রতিবাদী। তাঁদের মধ্যে অন্তত এক হাজার মহিলা। বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রের নেতৃত্বে পাল্টা সভা ও মিছিল করার চেষ্টা হলে সংঘর্ষেও জড়াল দু’পক্ষ। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও রাস্তা অবরোধ করে রেখেছেন প্রতিবাদীরা। আজ উত্তরপ্রদেশের আলিগড়েও প্রতিবাদী-পুলিশ সংঘর্ষের সময়ে গুলিতে আহত হয়েছেন পাঁচ জন।
কাল ভীম সেনার নেতা চন্দ্রশেখর আজাদ আরএসএস-প্রধান মোহন ভাগবতকে ভোটে লড়তে চ্যালেঞ্জ জানান। আরএসএসের সদর দফতর যে-শহরে, সেই নাগপুরেরই রেশমি বাগ ময়দানে দাঁড়িয়ে চন্দ্রশেখর বলেছিলেন, ‘‘আমরা সংবিধানে বিশ্বাস করি, আরএসএস করে মনুস্মৃতিতে। তাই দুই আদর্শের সংঘর্ষ অনিবার্য। আরএসএস-প্রধানকে অনুরোধ করছি, মিথ্যের পর্দা সরিয়ে ভোটের ময়দানে নামুন। এটা গণতন্ত্র।’’ আজ সকালেও টুইট করে ‘বহুজন সমাজ’-এর সদস্যদের অবিচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার ডাক দেন চন্দ্রশেখর। হরতালেরও ডাক দেন।
নাগপুরের সেই সভার পরে গত রাত থেকেই উত্তর-পূর্ব দিল্লির জাফরাবাদে মেট্রো স্টেশনের সামনে জাতীয় পতাকা নিয়ে ধর্নায় বসেছিলেন শ’দেড়েক মহিলা। তাঁদের হাতে ছিল নীল ব্যান্ড। সিএএ-এনআরসি থেকে ‘আজাদি’র পাশাপাশি ‘জয় ভীম’ স্লোগানও দেন তাঁরা। ধর্নার জেরে আজ জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশনের দরজা কিছু ক্ষণ বন্ধ থাকলেও পরে তা খুলে দেওয়া হয়। মোতায়েন করা হয় আধাসেনা।
আরও পড়ুন: রণক্ষেত্র আলিগড়, সংঘর্ষে আহত পাঁচ
কিন্তু পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র জাফরাবাদের কাছেই মৌজপুরে পাল্টা সমাবেশ ও মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায়। মৌজপুর ট্র্যাফিক সিগন্যালের কাছে থেকে এই মিছিল শুরু হয়েছিল। মিছিল প্রতিবাদীদের কাছাকাছি আসতেই উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ মিছিল আটকে দিলেও প্রতিবাদীদের সঙ্গে বিজেপি সমর্থকদের ইট ছোড়াছুড়ি হয়। কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয় পুলিশকে। কপিল মিশ্র পরে টুইট করেন, ‘‘আর একটা শাহিন বাগ হতে দেব না। জাফরাবাদ-চাঁদবাগের রাস্তা খালি করার জন্য দিল্লি পুলিশকে তিন দিন সময় দিয়েছি।’’
পুলিশ জানিয়েছে, এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। তবে জাফরাবাদে অবরোধ রয়েছে। প্রতিবাদীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সরানোর চেষ্টা করছে পুলিশ। দিল্লির বিজেপি নেতা বিজয় গয়ালের বক্তব্য, ‘‘বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হারাতে না-পেরে এখন এই ধরনের প্রতিবাদে মদত দিচ্ছেন।’’