ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
পাঁচ বছর একসঙ্গে থাকার পরে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধারাবাহিক ধর্ষণ এবং বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে পুরুষ সঙ্গীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন এক মহিলা। সেই মামলার রায়ে অভিযুক্তকে নির্দোষ ঘোষণা করে শুক্রবার ইলাহাবাদ হাই কোর্টের দুই বিচারপতি মন্তব্য করলেন, “যৌন হেনস্থার ধারাগুলি সঠিক ভাবেই নারীদের দিকে খানিকটা একপেশে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে সব সময়েই দোষটা পুরুষ সঙ্গীর।”
প্রায় সাত বছর একসঙ্গে কাটানোর পরে ২০১৯-এ পুরুষ সঙ্গীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেন মহিলা। বলেন বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গী বছরের পর বছর তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, যা ধর্ষণের শামিল। কিন্তু পরে তাঁকে বিয়ে করতে রাজি হননি। তাঁর জাত তুলে আপত্তিকর কথাও বলেছেন। পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার পাশাপাশি তফসিলি জাতি-জনজাতিদের হেনস্থার ধারাতেও মামলা করে। কিন্তু নিম্ন আদালত মামলাটি শুনানির পরে সঙ্গীকে বেকসুর ঘোষণা করে। মামলায় উঠে আসে, ওই মহিলা ২০১০-এ অন্য এক জনের সঙ্গে আইনি ভাবে বিয়ে করেছেন। কিন্তু অভিযুক্তের কাছে তা গোপন করে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। নিম্ন আদালতের বিচারক মন্তব্য করেছিলেন, “বিচ্ছেদ ছাড়া এক জন বিবাহিত নারীর দ্বিতীয় বিবাহ হতে পারে না। মহিলা অভিযুক্তের কাছে নিজের বিবাহের খবর লুকিয়ে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। নিজের জাত সম্পর্কেও মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন। অভিযুক্ত সঙ্গী এই মিথ্যাচার জানার পরেই বিয়ের প্রতিশ্রুতি থেকে পিছিয়ে যান। তা ছাড়া, পাঁচ-সাত বছর ধরে মামলাকারী অভিযুক্তের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করেছেন, বিভিন্ন জায়গায় স্বেচ্ছায় একত্রবাস করেছেন। এখন সঙ্গীকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত করতে পারেন না।”
হাই কোর্টের দুই বিচারপতি রাহুল চতুর্বেদী এবং নন্দপ্রসাদ শুক্ত মামলাটি শোনার পরে মন্তব্য করেছেন, “দেখা যাচ্ছে মামলাকারীই অভিযুক্তকে বেকুব বানিয়েছেন। বিয়ের কথা লুকিয়ে সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, নিজের জাতের পরিচয় নিয়েও মিথ্যা কথা বলেছেন। এখন সঙ্গীর বিরুদ্ধেই মামলা করে তাঁকে শাস্তি দিতে উদ্যত হয়েছেন।” এর পরেই বিচারপতিরা নিম্ন আদালতের রায়কে বহাল রেখে অভিযুক্তকে বেকসুর বলে রায় দেন।