এ রকমই তীর্থযাত্রীরা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন মিরাটের গ্রামে। — প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
২২ ফুটের ডিজে বক্স বাজছিল তারস্বরে। তাল মিলিয়ে নাচছিলেন শিবভক্তরা। এমন সময় ডিজে বক্সের মাথায় ছুঁয়ে যায় উপর দিয়ে যাওয়া ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের লাইন। ঘটনাস্থলেই তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু অন্তত পাঁচ তীর্থযাত্রীর। আহত আরও বেশ কয়েক জন। শনিবার রাতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মিরাট জেলায়।
হরিদ্বার থেকে জল সংগ্রহ করে শোভাযাত্রা করে ফিরছিলেন তীর্থযাত্রীদের একটি দল। দলের একেবারে সামনে ছিল ২২ ফুট উচ্চতার একটি ডিজে বক্স। মিরাটের ভবনপুর এলাকার রলি চৌহান গ্রামের উপর দিয়ে গিয়েছে ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের লাইন। আচমকাই ডিজে বক্সের মাথা ছুঁয়ে যায় বিদ্যুতের লাইনে। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তীর্থযাত্রীরা।
চিৎকার শুনে ছুটে আসেন রলি চৌহান গ্রামের বহু বাসিন্দা। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। অবশ্য পুলিশ পৌঁছনোর আগেই স্থানীয়রা বাইকে করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে শুরু করেছিলেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, অন্তত পাঁচ জনের মৃত্যু হয় চিকিৎসা শুরু করার আগেই। পাঁচ জনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। তাঁরা ওই হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন। এ ছাড়াও তড়িদাহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েক জন তীর্থযাত্রী।
মিরাটের জেলাশাসক দীপল মিনা বলেন, ‘‘হরিদ্বার থেকে জল সংগ্রহ করে ফিরছিলেন তীর্থযাত্রীরা। রলি চৌহান গ্রামে ঢোকার মুখে তাঁদের ডিজে বক্সের ফ্রেম ১১ হাজার ভোল্টের লাইনের সংস্পর্শে চলে আসে। তাতেই তড়িদাহত হয়ে ঝলসে যান তীর্থযাত্রীরা। মোট দশ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার মধ্যে পাঁচ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বাকিদের চিকিৎসা চলছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।’’
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তারস্বরে ডিজে বক্স বাজছিল তাই প্রাথমিক ভাবে দুর্ঘটনার কথা বোঝা যায়নি। কিন্তু আগুন জ্বলতে শুরু করলে স্থানীয়রা দৌড়ে আসেন। দেখা যায়, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঝলসে যান অনেক তীর্থযাত্রী। দুর্ঘটনার পর বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতির অভিযোগে পথ অবরোধ করেন তীর্থযাত্রীদের একাংশ। প্রশাসনের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, রলি চৌহান গ্রাম থেকে ৩২ জন যুবক গত ৪ জুলাই হরিদ্বারে গঙ্গার জল আনতে গিয়েছিলেন। সেই তীর্থযাত্রীদের দলের সঙ্গে ছিল ২২ ফুটের একটি ডিজে বক্স। শনিবার মিরাটের অঘৌরনাথ মন্দিরে ত্রয়োদশীর জল দান করার পর তীর্থযাত্রীদের গ্রামে ফেরার কথা ছিল। গ্রামেরই শিবমন্দিরে চতুর্দশীর জলদান করার কথা ছিল। কিন্তু তার ঠিক আগেই ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা।
প্রসঙ্গত, উল্টোরথের দিন একই ভাবে ত্রিপুরার উনকোটি জেলার কুমারঘাটে রথের চূড়া একটি উঁচু বৈদ্যুতিক তারে স্পর্শ করলে সেটিতে আগুন ধরে যায়। রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, ওই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু শিশু, তিন মহিলা-সহ মোট সাত জনের। গুরুতর জখম হন ১৬ জন।