ছবি: পিটিআই।
দু’দিন ধরেই মুখভার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার। সংসদে আসছেন, চেম্বারে বসছেন, লোকসভায় ঢুকছেন না।
কারণ? বিজেপির দাবি, রাহুল গাঁধীর অনুগামী কংগ্রেস সাংসদদের ‘উপদ্রব’। তাঁরা কথায় কথায় তেড়ে যাচ্ছেন, হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। স্পিকারের সঙ্গে বৈঠকে কংগ্রেস আশ্বাস দিয়েছিল, এ-সব আর হবে না। কিন্তু তারা কথা রাখেনি।
দিল্লি হিংসা নিয়ে আলোচনার দাবি তুলে কংগ্রেসের সাংসদেরা আজ ফের ওয়েলে নেমে হইহট্টগোল করলে সরকারের সুপারিশে এক ধাক্কায় তাঁদের সাত জনকে গোটা বাজেট অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে। এঁদের সাংসদপদ খারিজ করতে একটি কমিটি গড়ার অনুরোধ করেছে বিজেপি। স্পিকার সেই প্রস্তাব নাকি মেনেও নিয়েছেন।
যে-সাত সাংসদ আজ সাসপেন্ড হলেন, তাঁদের মধ্যে চার জনই কেরলের, রাহুল যে রাজ্যের সাংসদ। এঁরা হলেন, টি এন প্রথাপন, ডিন কুরিয়াকোসে, রাজমোহন উন্নিথন ও বেন্নি বেহনন। সঙ্গে তামিলনাড়ুর মানিকা টেগোর, অসমের গৌরব গগৈ আর পঞ্জাবের গুরজিৎ সিংহ আউজলা। অভিযোগ, বেলা ২টো নাগাদ এঁরা ওয়েলে নেমে, প্ল্যাকার্ড দেখিয়ে, স্পিকারের টেবিল থেকে কাগজ ছিনিয়ে, ছুড়ে ফেলেন। স্পিকারের আসনে থাকা বিজেপি সাংসদ রমাদেবী সভা মুলতুবি করে দেন। এক ঘণ্টা পরে ফের সভা বসলে সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর প্রস্তাব
ধ্বনিভোটে পাশ করে এঁদের সাসপেন্ড করা হয়। স্পিকারের আসনে
তখন বিজেপির মীনাক্ষী লেখি।
লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী সংসদের বাইরে বলেন, ‘‘এত দিন ধরে একটাই দাবি করছি আমরা, দিল্লির হিংসা নিয়ে আলোচনা করুন। সরকারের কিসের ভয়? দু’দিন ধরে স্পিকার আসছেন না। আমি নিজে গিয়ে বার বার অনুরোধ করেছি। তিনি সর্বেসর্বা। কিন্তু সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত সরকারের। বদলা নিচ্ছে তারা।’’ কংগ্রেস চাইছে, সাসপেন্ড হওয়া সাংসদেরা কাল সংসদ চত্বরে গাঁধী-মূর্তির নীচে ধর্না দিন। বিরোধীরাও এক সুরে প্রতিবাদ করুন।
আর বিজেপি চাইছে, ওই সাত সাংসদ যেন আর সংসদেই ঢুকতে না পারেন। প্রহ্লাদ জোশী বলেন, ‘‘এঁদের সদস্যপদ খারিজের জন্য কমিটি গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’’ এক বিরোধী নেতার মতে, সরকারের ফন্দি হল, এর পরে গোলমাল হলে বেশ কিছু বিরোধী সাংসদের সঙ্গে এক-দু’জন বিজেপি সাংসদকেও সাসপেন্ড করা। তাতে নিরপেক্ষতা ‘প্রমাণিত’ হবে, আবার বিরোধীদের বড় অংশকে লোকসভার বাইরে বার করে দেওয়া যাবে।
সাসপেন্ড হওয়ার পরে গৌরব বলেন, ‘‘সাসপেন্ড করুন, কিন্তু কাল দিল্লির হিংসা নিয়ে আলোচনা হোক। ভারতমাতার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে আমাদের শক্তি আসে। সংখ্যাটা বড় কথা নয়।’’ সাসপেন্ড সাংসদ মানিকা বলেন, ‘‘দিল্লি হিংসার আসল পান্ডা অমিত শাহ। সংসদে সরাসরি তাঁকে প্রশ্ন করতে চাই। ভয় পেয়ে তিনিই এই সব কাণ্ড ঘটাচ্ছেন।’’