প্রিয়ঙ্কা বঢরা। ছবি: পিটিআই।
বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার নিয়ে এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করলেন প্রিয়ঙ্কা বঢরা। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘কৃষকবিরোধী ওই আইনের বিরুদ্ধে যাঁরা আন্দোলনে নেমেছিলেন তাঁদের আপনারা (বিজেপি)গুন্ডা, জঙ্গি এবং দেশদ্রোহীর তকমা দিয়েছিলেন। ছ’শো-সাতশো কৃষক শহিদ হওয়ার পরে এখন পরিস্থিতি প্রতিকূল বুঝে কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করছেন। কৃষকদের কাছে ক্ষমা চাইছেন।’’
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল, বিজেপি-র তথ্যপ্রযুক্তি শাখার প্রধান অমিত মালব্যরা গত এক বছরে একাধিক বার আন্দোলনকারী কৃষকদের ‘খলিস্তানপন্থী জঙ্গি’, ‘মাওবাদী’ বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। মোদী সরাসরি এমন অভিযোগ না তুললেও কৃষক আন্দোলনের নেপথ্যে ‘গভীর ষড়যন্ত্রের’ কথা বলেছিলেন। শুক্রবার সেই প্রসঙ্গই এসেছে প্রিয়ঙ্কার বক্তব্যে।
গুরু নানকের জন্ম দিবসের পাশাপাশি শুক্রবার প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর জন্মদিন। সেই উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘আমার আনন্দ লাগছে, শেষ পর্যন্ত সরকার বুঝতে পেরেছে, এ দেশে কৃষকদের চেয়ে বড় কোনও শক্তি নেই।’’
তবে সেই সঙ্গেই তাঁর অভিযোগ, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড-সহ পাঁচ রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখেই কৃষি আইন নিয়ে কেন্দ্রের এই অবস্থান বদল। তাঁর দাবি, ওই রাজ্যগুলিতে জনমত সমীক্ষায় প্রতিকূল পরিস্থিতি বুঝেই মোদী এখন কৃষি আইন নিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করছেন মোদী।
উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস গাড়ির ধাক্কায় চার কৃষকের মৃত্যুর প্রসঙ্গ তুলে মোদীর উদ্দেশে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘আপনার মন্ত্রীর ছেলে আন্দোলনকারী কৃষকদের গাড়ির চাকায় পিষে মেরেছেন।’’
কৃষি আইন সাংবিধানিক ভাবে প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত কংগ্রেস লড়াইয়ের ময়দানে থাকবে জানিয়ে এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘আমাদের এখন একটাই কাজ। কৃষকদের পাশে থাকা। দীর্ঘ আন্দোলনপর্বে তাঁরা নানা সমস্যার জর্জরিত। ঋণের ভারে বিপর্যস্ত।’’
কৃষি আইন প্রত্যাহার প্রসঙ্গে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘‘শুধু কৃষি আইন প্রত্যাহার করলে হবে না। যে ৭০০ জন কৃষক মারা গেলেন তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আজ মোদীর পাশ থেকে বিভিন্ন রাজ্যের কৃষকেরা সরে গিয়েছেন তাই ভোটের টোটকা হিসেবে এই আইন প্রত্যাহার করতে চাইছেন। দেশের ৫৮ শতাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। কিন্তু মোদী সরকার কয়েক জন পুঁজিপতিতে সুবিধা করে দিতে কৃষক-স্বার্থ বিরোধী পদক্ষেপ করেছিল।’’