কংগ্রেসে বুড়ো হাড়েরই খেল্‌, ১০ জনপথে রাহুল

আজ হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রের ফল প্রকাশের পর দলে প্রবীণদেরই দাপট বাড়ল। অথচ সভাপতি হয়ে নবীনদের সামনে এনে দলের খোলনলচে বদলাতে চেয়েছিলেন রাহুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:১৫
Share:

উল্লাস: হরিয়ানার কারনালে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের উল্লাস। (ইনসেটে) রোহতকে গণনা কেন্দ্রের বাইরে ভূপেন্দ্র হুডা। বৃহস্পতিবার। পিটিআই

রাহুল গাঁধী ইস্তফা দেওয়ার পরেও দশ জনপথে একের পর এক বৈঠক হচ্ছিল। কিন্তু কোনও বৈঠকেই হাজির হননি রাহুল। আজ গেলেন। সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক করলেন। সদ্য কাল জামিন পাওয়া কর্নাটকের নেতা ডি কে শিবকুমারের সঙ্গে দশ জনপথেই ছবি তুললেন।

Advertisement

আজ হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রের ফল প্রকাশের পর দলে প্রবীণদেরই দাপট বাড়ল। অথচ সভাপতি হয়ে নবীনদের সামনে এনে দলের খোলনলচে বদলাতে চেয়েছিলেন রাহুল। আহমেদ পটেল, অশোক গহলৌত, গুলাম নবি আজাদদের দাপটে পারেননি সবটা।

লোকসভায় ভরাডুবির পর হাল ছেড়ে রেগেমেগে ইস্তফা দেন রাহুল। কিন্তু নিশ্চিত করেছিলেন, প্রবীণদের হাতে যেন দলের রাশ পুরোপুরি না যায়। হরিয়ানায় অশোক তানোয়ারকে সভাপতি করেছিলেন। সনিয়া গাঁধী সভানেত্রী হতেই তাঁকে সরানোর জন্য চাপ দেন ভূপেন্দ্র হুডা। প্রবীণেই ভরসা রাখেন সনিয়া। ক্ষুব্ধ অশোক দল ছাড়েন। হুডাকে হারাতেও জোর লাগান। কিন্তু ফলাফলে দেখা গেল, হেরেও আজ ‘জিতেছেন’ হুডা। হরিয়ানাকে ‘বাতিলের খাতায়’ ফেলে রেখেছিলেন কংগ্রেসের অনেকে। কিন্তু ৩১টি আসন জিতে মোদী-অমিতের নাভিশ্বাস ছুটিয়ে দিয়েছেন এই প্রবীণ নেতা। আহমেদ পটেল, শৈলজার সঙ্গে কথা বলে সনিয়া আজ সরকার গড়ার সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখতে বলেন এই ‘বাজিগর’ হুডাকে। সনিয়ার বার্তা পেয়ে দুপুর একটার সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হুডা আবেদন করলেন, ‘‘ভোট বিজেপির বিপক্ষে। দুষ্মন্ত চৌটালা, নির্দল ও আইএনএলডি মিলে সরকার গড়ি। সকলে সম্মান পাবেন।’’ দিল্লিতে তখন সনিয়া শুনছেন আহমেদ পটেলেরই কথা। দুষ্মন্তের সমর্থন ছাড়া গতি নেই।

Advertisement

অথচ হুডা আর দুষ্মন্ত— দুই জাঠ মিলে কি সম্ভব? তা হলে কি শৈলজাকে মুখ্যমন্ত্রী করা ভাল? নাকি দুষ্মন্তকেই মুখ্যমন্ত্রী পদ দেওয়া হবে? যেমনটি হয়েছিল কর্নাটকে কুমারস্বামীর বেলায়। দুষ্মন্ত বললেন, আরও সময় নেবেন। কাল তাসটি খেলবেন। ভোপালে সক্রিয় হলেন আর এক প্রবীণ মুখ্যমন্ত্রী, কমল নাথ। হুডার হয়েই বিজেপিকে বিঁধে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন।

আর হুডা বারবার স্মরণ করালেন সাংবাদিকদের, ‘‘যদি আরও আগে দায়িত্ব পেতাম..।’’ অর্থাৎ স্পষ্ট আক্রমণ রাহুলকে। প্রবীণ ব্রিগেডের অনেকেই হাত কামড়াচ্ছেন, রাহুলের কথা না শুনে আরও আগে হুডাকে দায়িত্ব দিলে হরিয়ানা আজ কংগ্রেসের দখলে হত। মহারাষ্ট্রকেও অবজ্ঞা করা ঠিক হয়নি। কংগ্রেসের এক নেতা বললেন, ‘‘নবীনদের শক্তি ও উচ্ছ্বাস প্রয়োজন। কিন্তু পঞ্জাবে ক্যাপ্টেন, মধ্যপ্রদেশে কমল নাথ, রাজস্থানে গহলৌত, হরিয়ানায় হুডা— এঁরা সকলে নিজ নিজ এলাকার প্রভাবশালী মুখ। প্রবীণদের অভিজ্ঞতার দামও দিতে হবে। রাহুলের তা বোঝা উচিত।’’

এই জয় কি তবে কংগ্রেসে কি নতুন বিবাদের সূচনা করবে? ভবিষ্যৎই তার উত্তর দেবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement