গৌরী লঙ্কেশ। ফাইল চিত্র।
বেঙ্গালুরুর কাছে রাজরাজেশ্বরী নগরে নিজের বাড়িতেই খুন হয়ে গেলেন প্রবীণ সাংবাদিক ও সমাজকর্মী গৌরী লঙ্কেশ। মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ অজ্ঞাতপরিচয় তিন দুষ্কৃতী খুব কাছ থেকে অন্তত সাতটি গুলি ছোড়ে গৌরীকে লক্ষ্য করে। তার মধ্যে তিনটি গৌরীর মাথা, গলা ও বুক ফুঁড়ে দেয়।
নির্ভীক সাংবাদিক বলে পরিচিত ৫৫ বছরের গৌরী বরাবরই গেরুয়া শিবিরের কট্টর সমালোচক হিসেবেও ছিলেন প্রথম সারিতে। ‘গৌরী লঙ্কেশ পত্রিকে’ নামে কন্নড় সাপ্তাহিক ট্যাবলয়ে়ড সম্পাদনা করতেন। সেখানে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের নেতাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু খবর ছেপেছিলেন। যার জন্য তাঁর নামে একাধিক মানহানির মামলা ঝুলছিল। তার মধ্যে একটি মামলা ছিল ধারওয়াড়ের বিজেপি সাংসদ প্রহ্লাদ জোশী ও বিজেপি নেতা উমেশ ধুশি-র, তাঁদের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগ এনে খবর করেছিলেন গৌরী। সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে রায়কে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। জামিনও পেয়েছিলেন।
কিন্তু আকস্মিক এই হত্যাকাণ্ড অনেকগুলো প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। অভিযোগের আঙুল উঠছে প্রধানত গেরুয়া শিবিরের দিকেই। কর্নাটকের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার মতে, গৌরীর হত্যা আসলে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা। রাহুল গাঁধী টুইট করেছেন, এ ভাবে গৌরীকে খুন করে সত্যকে চাপা দেওয়া যাবে না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতেও, বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। এর আগে কর্নাটকেরই যুক্তিবাদী লেখক এম এম কালবুর্গি, মহারাষ্ট্রের নরেন্দ্র দাভোলকর ও গোবিন্দ পানসারের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এর মিল খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে। পিনারাই বিজয়ন থেকে সীতারাম ইয়েচুরি, সরব সকলেই।
আরও পড়ুন:জোহরা পড়বেই, সব দায়িত্ব নেবেন গম্ভীর
গৌরীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, বিজেপি সমর্থকেরা হামলা চালাতে পারে এমন আশঙ্কা তাঁরা করছিলেনই। ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়েছেন গৌরীর ভাই ইন্দ্রজিৎ লঙ্কেশ। আগামিকাল দিল্লিতে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন। গৌরীর বিরুদ্ধে অন্যতম মামলাকারী বিজেপি নেতা প্রহ্লাদ জোশীর অবশ্য দাবি, ‘‘কোনও প্রমাণ ছাড়াই এই হত্যার সঙ্গে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক আদর্শের যোগ খোঁজা হচ্ছে। আমরাও চাই, গৌরীর খুনিদের শাস্তি হোক।’’