ফাইল চিত্র।
অতিমারির প্রবল প্রাদুর্ভাবের সময় থেকে আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকতে থাকা রেল প্রবীণ যাত্রীদের টিকিটে ছাড় বাতিল করে দিয়েছিল। অতিমারি পরিস্থিতি বহুলাংশে প্রশমিত হয়ে আসা সত্ত্বেও বয়স্কদের সেই ছাড় পুনরায় চালু না-করায় রেলকে পড়তে হয়েছে সমালোচনার মুখে। এই অবস্থায় ভর্তুকি বাড়িয়ে প্রবীণদের ট্রেনযাত্রায় টিকিটে ছাড় ফিরিয়ে আনা যায় কি না, বিবেচনা করছে রেল।
বয়স্কদের টিকিটে ছাড়ের ক্ষেত্রে বয়সের নিম্নতম সীমা আগের মতো মহিলাদের ক্ষেত্রে ৫৮ বছর এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ৬০ বছরে আটকে না-রেখে তাকে ৭০ বছরে নিয়ে যাওয়া যায় কি না, শুরু হয়েছে সেই ভাবনা। বর্তমান পরিস্থিতিতে আর্থিক দায় কমাতে বেশ কিছু বিকল্প পথের কথা ভাবছে রেল। ছাড়ের বয়ঃসীমা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাতানুকূল শ্রেণি থেকে রেলের আয় যে-হেতু বেশি হয়, তাই ওই শ্রেণির টিকিটে ছাড় না-দিয়ে স্লিপার ও সাধারণ শ্রেণিতে ছাড় দেওয়া যায় কি না, সেই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে রেল। স্লিপার ও সাধারণ শ্রেণিতে ছাড় দিলে যে-সব যাত্রীর সুরাহা প্রয়োজন, তাঁদের অধিকাংশকেই ছাড়ের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন রেলকর্তাদের একাংশ।
অতিমারির আগে মহিলা যাত্রীদের ক্ষেত্রে ৫৮ বছর বা তার বেশি বয়সিরা টিকিটের মূল্যের উপরে ৫০ শতাংশ এবং পুরুষ যাত্রীরা ৬০ বছর বা তার বেশি বয়স হলে টিকিটের মূল্যের উপরে ৪০ শতাংশ ছাড় পেতেন। গত দু’বছর ওই ছাড় না-দিয়ে রেল বছরে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি সাশ্রয় করতে পেরেছে বলে রেল শিবির সূত্রের খবর। ক্ষতির বহর কমিয়ে আয় বাড়াতে মরিয়া রেল অতিমারি দুর্বল হয়ে পড়ার পরেও ছাড় ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। এখন বিভিন্ন স্তরের সমালোচনা সামাল দিতে রেল আর্থিক ক্ষতির ভার কমিয়ে বয়স্কদের ছাড় ফেরানোর পথ খুঁজছে।
কেরল থেকে রাজ্যসভার সদস্য এবং রেলওয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য বিনয় বিশ্বম ট্রেনে প্রবীণ যাত্রীদের ছাড় ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে কয়েক মাস আগে রেলমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন। এমনিতেই যাত্রী-ভাড়া থেকে রেলের যথেষ্ট আয় হয় না বলে জানিয়ে টিকিটে বিশেষ বার্তা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করেছে রেল। ওই বার্তায় বলা হচ্ছে, টিকিটের মূল্যের মাধ্যমে সফরের খরচের মাত্র ৫৭ শতাংশ ফেরত পায় রেল। প্রাক্-অতিমারি পরিস্থিতিতে সম্পন্ন বয়স্ক যাত্রীদের ট্রেনের টিকিটের ছাড় গ্রহণ না-করার অনুরোধ জানিয়ে প্রচার চালাত রেল। যদিও সেই প্রচারে খুব একটা কাজ হয়নি বলেই খবর।
আয় বাড়াতে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ বা টিকিটের ‘ডায়নামিক প্রাইসিং’ চালু করতে চাযইছে রেল। ওই পরিকল্পনার আওতায় প্রিমিয়াম তৎকাল টিকিট চালু করার কথাও ভাবা হচ্ছে। সাধারণ টিকিটের চেয়ে খানিকটা বেশি ভাড়ায় টিকিট বিক্রি করে যাত্রী-ভাড়ার ক্ষতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে রেলের খবর। তবে এই বিষয়ে শীর্ষ স্তরে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।