দিল্লিতে জল-প্রলয়। পুরাতন যমুনা সেতুর কাছে এক মানুষসমান জল। ছবি: পিটিআই।
দিল্লির বহু রাস্তা প্লাবিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ব্যাপক যানজটের ছবি ধরা পড়েছে রাজধানীর বুকে। শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা প্লাবিত হওয়ার কারণে যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে জনসাধারণকে।
রিং রোড, কাশ্মীরি গেটের মতো ব্যস্ত জায়গা আগেই প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার নতুন করে আরও বহু রাস্তায় যমুনার জল ঢুকেছে। পাস্তা রোড, গীতা কলোনি থেকে গান্ধী নগরের পুরাতন লোহার সেতু পর্যন্ত জলমগ্ন থাকায় যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই রাস্তায় আসা যানবাহনের চালকদের রাজারাম রোহলী মার্গ অথবা মাস্টার প্ল্যান রোড ধরে স্বামী দয়ানন্দ মার্গে যেতে বলা হচ্ছে। সেখান থেকে শাহদারা হয়ে জিটি রোড।
তা ছাড়া চার দিকে ‘জলযন্ত্রণার’ কারণে প্রশাসনের তরফে পথযাত্রী এবং দিল্লিবাসীদের অনুরোধ করা হচ্ছে, বাড়ি থেকে বেরনোর আগে তাঁরা যেন ট্র্যাফিক পরিস্থিতি জেনে নেন। অন্য দিকে, এই বন্যা পরিস্থিতির কারণে রাজধানীর মেট্রো পরিষেবাতেও প্রভাব পড়েছে। দিল্লি মেট্রো কর্পোরেশন (ডিএমআরসি) জানিয়েছে, যমুনার জল বাড়তে থাকায় যমুনা ব্যাঙ্ক মেট্রো স্টেশন বরাবর রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে স্টেশনে ঢোকার মতো পরিস্থিতি নেই। তাই ওই স্টেশনে ঢোকা এবং বেরোনোর পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
যমুনার উপরে চারটি মেট্রোরেল সেতু রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই সেতুর উপরে ট্রেনের গতি কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই সেতুর উপরে ঘণ্টায় ৩০ কিমি বেগে ট্রেন চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে মেট্রোর অন্য রুটে পরিষেবা স্বাভাবিক বলে জানিয়েছে ডিএমআরসি।
যমুনার জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় মেট্রো পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত।
সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টের সময় যমুনার জলস্তর অত্যধিক বৃদ্ধি পাবে। ফলে আরও অনেক এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কোনও কোনও এলাকায় জলস্তরও বাড়বে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল দিল্লিবাসীকে প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় না বেরোতে পরামর্শ দিয়েছেন। শুধু তাই-ই নয়, যে সব এলাকা প্লাবিত এবং প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, সেই সব এলাকায় রবিবার পর্যন্ত সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি থেকে কাজ করার (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
দিল্লির যে সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে, সেগুলি হল— মনাস্ট্রি মার্কেট, যমুনা বাজার, গঢ়হী মান্ডু, গীতা ঘাট, বিশ্বকর্মা কলোনি, খাড্ডা কলোনি, নীল ছেত্রী মন্দির এবং সংলগ্ন এলাকা, পুরাতন রেলসেতু, নিম করোলি গৌশালা, রিং রোড থেকে ওয়াজ়িরাবাদ এবং সেখান থেকে মঞ্জু কা টিলা পর্যন্ত সমস্ত রাস্তা জলমগ্ন। গীতা কলোনিতে যমুনা নদীর ধারে শ্মশান ডুবে যাওয়ায় সেখানে শেষকৃত্যের কাজ বন্ধ। তার পরিবর্তে মৃতদের পরিবারকে দাহকাজের জন্য কাকরদুমা এবং গাজ়িপুর শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।