প্রতীকী ছবি।
পরীক্ষায় নম্বর বেশি পাওয়ায় সহপাঠীকে বিষ খাইয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে। সোমবার মধ্যপ্রদেশের সাতনার একটি বেসরকারি স্কুলের ঘটনা।
ক্লাস চলছিল তখন। অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী নিজের বোতল থেকে জল খাওয়ার পরই অসুস্থ বোধ করতে শুরু করে। জল খাওয়ার পরই পাশে বসা আর এক ছাত্রীকে ওই ছাত্রীটি জানায় জলে একটা অদ্ভুত গন্ধ পেয়েছে সে। সন্দেহ হয়, জলে কেউ কিছু মিশিয়ে দিয়েছে। ছাত্রীটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্কুল থেকে বাড়ির লোককে খবর পাঠানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিত্সকরা জানান, জলের বোতলে মশা মারার ওষুধ মেশানো হয়েছিল।
তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে যে তথ্য উঠে আসে তা চমকে দেওয়ার মতো। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আক্রান্ত ছাত্রীটি তারই সহপাঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে। পুলিশকে সে জানায়, সহপাঠীর থেকে পরীক্ষায় বেশি নম্বর পেয়েছিল সে। সেটা ওই সহপাঠী মেনে নিতে পারেনি। তাকে খুনের পরিকল্পনা করতেই জলের বোতলে মশা মারার ওষুধ মিশিয়ে দেয়। পুলিশ স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখে। সেখানেও ধরা পড়ে আক্রান্ত ছাত্রীর বোতলে কিছু একটা মেশাচ্ছে আর এক ছাত্রী। তার পর অন্য ছাত্রীর ব্যাগে শিশিটি ঢুকিয়ে রাখতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: তিন তালাক নিয়ে আইন আনার ভাবনা নেই কেন্দ্রের
আরও পড়ুন: কানহাইয়াকে কালি দিতে গিয়ে প্রহৃত
পরে জানা যায়, এই কাণ্ড ঘটানোর পর পুলিশের হয়রানির ভয়ে অভিযুক্ত ছাত্রীটিও পর দিন মশার ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মনস্তত্ত্ববিদেরা বলছেন, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এখন আমরা ‘ইঁদুর দৌড়’-এ সামিল। সেই দৌড়ে সামিল ধীরে ধীরে জড়িয়ে ফেলছি আমাদের সন্তানদেরও। ‘তোমাকে ভাল ফল করতেই হবে’, ‘তোমাকে ফার্স্ট হতেই হবে’— এই ধরনের শব্দগুলো শিশুমনে ঢুকিয়ে দিয়ে প্রতিযোগিতায় নামিয়ে দিচ্ছেন অভিভাবকরা। কখনও তুলনা টানছেন পাশের বাড়ির ছেলেটি বা মেয়েটির ভাল রেজাল্টের উদাহরণ দিয়ে! কিন্তু কখনও ভেবে দেখার ফুরসত হয় না, প্রতিযোগিতায় যদি কোনও ভাবে বিফল হয় সেই অপরিণত মনটি, তার ফল কতটা মারাত্মক হতে পারে! মধ্যপ্রদেশের এই ঘটনা সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।