সরকারের মুখরক্ষা করতে গিয়ে শীর্ষ আদালতে মুখ পুড়ল অরবিন্দ কেজরীবালের।
দিল্লি সরকারের ভাবমূর্তি এবং মর্যাদার পক্ষে ক্ষতিকর কোনও খবর প্রকাশিত হলে সেই সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন কেজরীবাল। গত ৬ মে জারি হয় নির্দেশিকাও। তবে আজ সুপ্রিম কোর্ট সেই নির্দেশিকার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তোলে। ওই নির্দেশ কার্যকর করার উপরে সাময়িক স্থগিতাদেশও জারি করেছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে সুর নরম করেছে দিল্লি সরকারও। জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্দেশিকা কার্যকর হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, দিল্লিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়ে শিরোনামে এসেছে আপ নেতৃত্ব। যদিও মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের দাবি, ইচ্ছে করে সংবাদমাধ্যম আপ ও দিল্লি সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এই কাজে সংবাদমাধ্যম ‘সুপারি কিলারে’র ভূমিকা নিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। সে জন্য আপ তথা দিল্লি সরকারের বিরোধী সংবাদ বন্ধ করতে ওই নির্দেশিকা জারি হয়। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য বা সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে কোনও নেতিবাচক খবর প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত হলে সেই সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারবে সরকার। নির্দেশিকা জারির পরেই দেশ জুড়ে শুরু হয় বিতর্ক।
আজই আবার কেজরীবালের বিরুদ্ধে নিতিন গডকড়ীর দায়ের করা একটি মানহানির মামলা সুপ্রিম কোর্টে ওঠে। কেজরীবালের আইনজীবী বলেন, গডকড়ীর বিরুদ্ধে কেজরীবালের মন্তব্যকে বাক্স্বাধীনতার অধিকার হিসাবেই দেখা হোক। জবাবে সুপ্রিম কোর্টের দু’সদস্যের বেঞ্চ জানতে চায়, কেজরীবাল যখন বাক্স্বাধীনতার যুক্তি দিচ্ছেন, তখন তাঁরই সরকার কেন সংবাদমাধ্যমের মুখ বন্ধের চেষ্টা করছে? বিচারপতিদের প্রশ্ন, কোন যুক্তিতে এই নির্দেশিকা জারি হল?
এই মামলার পরের শুনানি ৮ জুলাই। কেন ওই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, দিল্লি সরকারের কাছে ৮ তারিখে সেই জবাব চেয়েছে আদালত। তত দিন নির্দেশিকার উপরে সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।
শীর্ষ আদালতের এমন পদক্ষেপে নতুন করে অস্বস্তিতে পড়েছে আপ শিবির। সূত্রের খবর, নির্দেশিকা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন খোদ কেজরীবালই। ফলে এই নিয়ে দলের কোনও নেতাই মুখ খুলতে চাননি। আজ সন্ধেয় দিল্লি সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্দেশিকার উপর স্থগিতাদেশ জারি করছে দিল্লি প্রশাসন। আমরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলতে বদ্ধপরিকর।’’