লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। -ছবি সংগৃহীত।
তফসিলি জাতি/উপজাতি সংক্রান্ত আইনের সংশোধনী নিয়ে সংরক্ষণ বিরোধীদের ক্ষোভ প্রশমনে এ বার সবক’টি রাজনৈতিক দলকে আলোচনার টেবিলে বসার আহ্বান জানালেন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন।
ওই আইনে কিছু ফাঁক ছিল। তার প্রেক্ষিতে ওই আইনে যাঁরা গ্রেফতার হতে পারেন, তাদের জন্য একটি ‘রক্ষাকবচ’ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তাতে তফসিলি জাতি/উপজাতির স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হচ্ছিল বলে আইনটি সংশোধন করা হয় গত মাসে। সেই সংশোধনীর খসড়া গত ৬ এবং ৯ অগস্ট যথাক্রমে লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশ হয়।
এর পরেই ফুঁসে ওঠেন সংরক্ষণ বিরোধীরা। গত কাল ওই সংশোধনীর প্রতিবাদে ‘ভারত বন্ধ’-এর ডাক দেওয়া হয়। লোকসভায় পাশ হওয়া সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকটি পিটিশন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। তারই প্রেক্ষিতে এ দিন কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
ইনদওরে বিজেপি-র ট্রেডার্স সেলের একটি সভায় বৃহস্পতিবার লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন বলেন, ‘‘এখন বিষয়টিকে নিয়ে রাজনীতি করাটা ঠিক হচ্ছে না। কারণ, সংসদের দুই কক্ষে সব দলই ওই সংশোধনীটির পক্ষে ভোট দিয়েছে। যাতে আইনের মূল ভিত্তিটা ঠিক থাকে। যাতে সব রাজনৈতিক দল আলোচনার টেবিলে বসতে পারে, এখন তার পরিবেশটা গড়ে তুলতে হবে আর তা সুনিশ্চিত করতে হবে।’’
আরও পড়ুন- ১৫ বছর পর অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হল লোকসভায়
আরও পড়ুন- স্পিকারের বৈঠকে গরহাজির বিরোধীরা
তিনি কী বলতে চাইছেন, তা বোঝাতে শিশুদের চকোলেট দেওয়ার একটি উপমা দেন লোকসভার স্পিকার।
সুমিত্রা বলেন, ‘‘ধরুন, আমি আমার ছেলেকে একটা খুব বড় চকোলেট দিলাম। কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম, ছেলে যদি এক বারে গোটা চকোলেটটা খেয়ে ফেলে, তা হলে সেটা তার শরীরের পক্ষে ভাল হবে না। এটা ভেবে ছেলের হাত থেকে গোটা চকোলেটটা কেড়ে নিতে গেলে সে তো ক্ষেপে যাবে। কান্নাকাটি শুরু করে দেবে। সে ক্ষেত্রে বুঝিয়েসুজিয়ে ছেলের হাত থেকে চকোলেটটা নিয়ে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। আর তা না করে কারও কাছ থেকে জোর করে কিছু কেড়ে নিতে গেলে তো বিস্ফোরণ হয়ে যাবে।’’
লোকসভার স্পিকারের মতে, কেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর তফসিলি জাতি/উপজাতি সংক্রান্ত আইন সংশোধন করা হল, তার প্রয়োজনীয়তা কোথায় ছিল, সবাইকে তা বোঝা ও বোঝানোর জন্যই এখন সবক’টি রাজনৈতিক দলের বসা উচিত আলোচনার টেবিলে।
সুমিত্রা বলেন, ‘‘যে সামাজিক অবস্থার মধ্যে আমরা রয়েছি সেটা সঠিক নয়। আগে যদি সমাজের কোনও অংশের ওপর অবিচার হয়ে থাকে, তার মানে এই নয় যে, বিষয়টির নিষ্পত্তির জন্য এ বার সমাজের অন্য অংশের ওপর অবিচার করতে হবে। দেখতে হবে আইনের চোখে কেউই যেন বঞ্চিত না হন।’’