অযোধা মামলার দ্রুত শুনানি করতে রাজি হল না সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তা-ই নয়, যাঁর আর্জি শুনে রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলায় মধ্যস্থতা করতে চেয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর, মামলায় সেই সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত।
২১ মার্চ স্বামীর আর্জি শুনে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, বিবাদমান দু’পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটাতে আগ্রহী হলে তিনিও মধ্যস্থতা করতে পারেন। কিন্তু আজ শীর্ষ আদালতে অযোধ্যা মামলার শুনানির সময় বিচারপতিরা স্বামীর উদ্দেশে মন্তব্য করেন, ‘‘আদালত ভেবেছিল আপনি এই মামলার অংশীদার। আপনি যে যুক্ত নন, সে কথা তো আদালতকে বলেননি! সংবাদমাধ্যম থেকেই সেটা জানতে পারলাম!’’ মামলা নাটকীয় মোড় নিতেই পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন দুঁদে আইনজীবী সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। বলেন, ‘‘অযোধ্যা মামলা আমার ধর্মাচারণের অধিকারে আঘাত করছে। সে জন্যই হস্তক্ষেপের আর্জি জানাই।’’ এর পরেই শীর্ষ আদালত জানায়, মামলা নিস্পত্তিতে দ্রুত শুনানি হবে না।
২০১০-এ ইলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ অযোধ্যায় বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমিকে তিন ভাগে ভাগ করার কথা বলেছিল। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখাড়া ও রামলালা— তিনটি অংশে এই জমি ভাগ করার প্রস্তাব নিয়ে বিচারপতিরাও যদিও এক মত হতে পারেননি। তিন বিচারপতির মধ্যে দু’জন পক্ষে, এক জন বিপক্ষে মত দেন। এমনকী দশ দিন আগে প্রধান বিচারপতির প্রস্তাব নিয়েও দেখা গিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সে খেহরের বক্তব্য ছিল, ধর্মীয় ভাবাবেগের বিষয়টির সমাধান আলোচনার মাধ্যমে করা যেতে পারে। বিতর্ক এড়াতে সব পক্ষকেই দেওয়া-নেওয়ার পথে এগোনোর পরামর্শ দেন। খেহরের প্রস্তাবের পরে উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ইঙ্গিত দেন, ২৫ বছরের ঝুলে থাকা বিতর্ক আলোচনার মাধ্যমে মেটানোর পক্ষে তিনি। হিন্দু পক্ষের অন্যতম মামলাকারী মহন্ত ধর্মদাস মামলার শুনানির জন্য দিল্লিতে এসেছিলেন। মুসলিম পক্ষের মামলাকারী হাজি মেহবুবও জানান, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে বৈঠক করবেন। বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটির আহ্বায়ক জাফরিয়াব জিলানির মতো অনেকেই অবশ্য মনে করছেন, আলোচনার মাধ্যমে কিছু হওয়ার নয়। রাম জন্মভূমি ন্যাস ট্রাস্টের প্রধান মহন্ত নৃত্যগোপাল দাসও বলেন, এ বিষয়ে সমঝোতা হতে পারে না।