গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বিহারে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ‘কম্বাইন্ড কম্পিটিটিভ’ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ এবং নতুন করে পরীক্ষার দাবিতে বিক্ষোভরত পরীক্ষার্থীদের উপর পুলিশি নিপীড়নের ঘটনায় হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকার করল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার আবেদনকারী পক্ষকে এ বিষয়ে পটনা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে আবেদনকারী আনন্দ লিগ্যাল এইড ফোরাম ট্রাস্টের আইনজীবী বিপিএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে পুলিশি লাঠিচার্জের ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন। পাশাপাশি, পটনার গান্ধী ময়দানে ‘আমরণ অনশনে’ বসা প্রাক্তন ভোটকুশলী তথা জন সুরাজ পার্টির নেতা প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) গ্রেফতারির প্রসঙ্গও তোলেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনাদের ভাবাবেগ বুঝতে পারছি। কিন্তু আমরা সরাসরি এই আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করে কোনও উদাহরণ তৈরি করতে চাই না।’’ প্রসঙ্গত, বিপিএসসি পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই অশান্তি চলছে পশ্চিমবঙ্গের পড়শি রাজ্যটিতে। চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ আন্দোলনে নেমেছেন। সেই আন্দোলনে প্রথম থেকেই রয়েছেন পিকে। যদিও প্রতিবাদী চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ এই আন্দোলনে রাজনীতির প্রবেশ পছন্দ করছেন না বলে জানিয়েছেন।
রবিবার ৭০তম বিপিএসসি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে গান্ধী ময়দানে জমায়েত করেছিলেন হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী। পিকে-ও সেখানে ছিলেন। রাতে সেই জমায়েত মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বাড়ির দিকে এগোতে শুরু করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পিকের বিরুদ্ধে এফআইআরও হয়। তার পর তিনি অনশনে বসেছিলেন। কিন্তু তাঁকে সোমবার ভোরের আলো ফোটার আগেই সেখান থেকে তুলে যায় পুলিশ। গ্রেফতারের পর পিকে-র স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে দুপুর নাগাদ আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক আরতি উপাধ্যায় ২৫ হাজার টাকার বন্ডে তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে বিচারক পিকে-কে এ-ও শর্ত দেন ভবিষ্যতে এই রকম প্রতিবাদে অংশ নিতে পারবেন না পিকে।
কিন্তু ধৃত জন সুরাজ নেতা এবং তাঁর আইনজীবী জামিনের বন্ডে সই করতে অস্বীকার করায় সোমবার বিকেলে তাঁকে পটনার জেলে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু, এর পর বিচারক উপাধ্যায়ের এজলাসে নিঃশর্ত জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন পিকের আইনজীবী। প্রথমে রাজি না হলেও পরে বিচারক পিকে-কে বিনা শর্তে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু গভীর রাতে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বিহার সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের সত্যতা মেলায় গত ৪ জানুয়ারি পাটনার ২২টি কেন্দ্রে নতুন করে বিপিএসসির পরীক্ষা হয়েছে। ফের পরীক্ষায় বসার জন্য ‘যোগ্য’ ঘোষিত ১২০১২ জন প্রার্থীর মধ্যে, মোট ৮১১১ জন আবেদন করেছিলেন,পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৫৯৪৩ জন।