সুপ্রিম কোর্টের রায় জানার পরই অরুণাচল নিয়ে আজ তড়িঘড়ি বৈঠকে বসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদরা। পরের বৈঠকটি হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে। সেখানে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি। সেখান থেকে বেরিয়ে রোহতগি সংবাদসংস্থাকে জানিয়ে দেন, রায় কার্যকর করতে রাজ্যপাল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। এর পরে আর ইটানগরে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেননি নাবাম টুকি। সন্ধেতেই দিল্লির অরুণাচল ভবনে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে নেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতিলিপি-সহ ক্ষমতায় ফেরার চিঠি পাঠান রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত রাজ্যপাল তথাগত রায়কে।
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ আজ এ বিষয়ে মুখ না খুললেও আপাতত নিজেদের মুখ রক্ষায় দলের পক্ষ থেকে দিল্লিতে বলা হয়, এ ক্ষেত্রে বিজেপির কিছু করার নেই। এটি নিছক কংগ্রেসেরই অন্তর্কলহ। তাদের দল থেকেই বিক্ষুব্ধরা বেরিয়ে এসে অনাস্থা প্রকাশ করেছিলেন। বিজেপি নতুন সরকারকে সাহায্য করেছে মাত্র। তবে ঘরোয়া মহলে দলের নেতারা কবুল করছেন, অসম জয়ের পর গোটা উত্তর-পূর্বে যে ভাবে হইহই করে বিজেপির প্রসারের লক্ষ্য নিয়েছিলেন তাঁরা, আজকের রায়ে তা খানিকটা হলেও ধাক্কা খেল।
তবে সুপ্রিম কোর্টের রায় পর্যালোচনা করে মোদীর মন্ত্রীরা প্রাথমিক ভাবে মনে করছিলেন, লড়াই এখনও বাকি আছে। পরে সুর বদলে যায় সরকারের। কৌশল হিসেবে স্থির হয়, আদালতে রায় পুনর্ববেবেচনার আর্জি যদি জানাতে হয় সেটা অরুণাচলের নেতাদেরই দিয়েই করানো হবে। কেন্দ্রের সরকার আপাতত বিষয়টি থেকে হাত ধুয়ে ফেলবে। ফলে রাজ্যপাল জ্যোতিপ্রসাদ রাজখোয়ার অপসারণ বা ইস্তফা এখন সময়ের অপেক্ষা।
ক্ষমতায় ফিরলেও টুকিকে বিধানসভায় গরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হলে বিদ্রোহী কালিখো পুলদের পাশে পেতে হবে। সে কারণে সকালের হুঙ্কার আড়ালে সরিয়ে সন্ধেতেই টুকি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেন পুলের দিকে। রাজ্যের সাংবিধানিক সঙ্কটের যাবতীয় দায় বিজেপির উপরে চাপিয়ে পুল ও তাঁর অনুগামীদের নিজের বন্ধু বলে সম্বোধন করে বলেন, “আমরা আগে যেমন এক সঙ্গে সরকার চালাচ্ছিলাম, এখনও তেমনই চলবে। পুল ও তাঁর সঙ্গীরা এত দিন আমাদের সঙ্গে, কংগ্রেসেই ছিলেন। আমাদের মধ্যে কোনও সমস্যাই ছিল না। সরকার হাতিয়ে নিয়ে সব সমস্যা তৈরি করেছিল বিজেপি। আশা করি পুলরা রাজ্যের উন্নতির জন্য আগের মতোই আমাদের পাশে থাকবেন। আগামীকাল ইটানগর ফিরে কংগ্রেসের বৈঠক ডাকব।”
পুল কিন্তু এখনও আশাবাদী। বলেছেন, ‘‘নাবাম টুকি আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারবেন না। সংখ্যা তাঁর সঙ্গে নেই।’’ তবে ইটানগরের খবর, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর নতুন করে বিধায়ক টানাটানির খেলা শুরু হয়েছে।