‘বিদ্রোহী’ বিচারপতির সাংবাদিক বৈঠক আইনত অসিদ্ধ নয়। কিন্তু এটা অন্যায্য। না করাই শ্রেয়। এটা প্রথা ভাঙা। ফাইল চিত্র।
মণিপুরে ভুয়ো সংঘর্ষগুলি নিয়ে ঢিমেতালে তদন্ত চালানো ও ঠিকমতো মামলা রুজু না করায় সিবিআইকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট।
২০০৩ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে হওয়া ভুয়ো সংঘর্ষগুলি নিয়ে তদন্ত করতে গত বছর জুলাই মাসে সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তদল গড়ে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। মণিপুরের মানবাধিকার সংগঠনগুলি মোট ১৫২৮টি ভুয়ো সংঘর্ষর অভিযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। এর মধ্যে ৯৭টি ঘটনার তদন্তভার গত বছর জুলাইতে সিবিআইকে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার মধ্যে প্রথম দফায় ৪২টি ঘটনাকে নিয়ে তদন্ত করতে বিশেষ তদন্তদল (সিট) গড়ে সিবিআই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সিবিআই মাত্র ১২টি ঘটনা নিয়ে মামলা রুজু করেছে। অনেক ভুয়ো সংঘর্ষের প্রত্যক্ষদর্শী তথা ২০০৯ সালে ইম্ফল বিটি রোডে সঞ্জিৎ হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত হেড কনস্টেবল হেরোজিৎ সিংহ সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে নিজের জবানবন্দি নথিভুক্ত করার আবেদন জানান। তিনি এমনও বলেন, বার বার বলা সত্ত্বেও সিবিআই তাঁর জবানবন্দি নিচ্ছে না।
ভুয়ো সংঘর্ষের বিচার চালাচ্ছে বিচারপতি ইউ ইউ ললিত এবং বিচারপতি বি লকুরের ডিভিশন বেঞ্চ। হেরোজিতের হলফনামা বিচার করে তাঁরা দিল্লিতে যে কোনও বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে হেরোজিতের জবানবন্দি নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। হেরোজিতের বক্তব্য এবং সিবিআইয়ের কাজকর্ম তদারক করার পরে এ দিন সুপ্রিম কোর্ট ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে আরও ৩০টি এফআইআর রুজু করতে হবে বিশেষ তদন্তদলকে। তদন্তগুলি তদারকের দায়িত্ব খোদ সিবিআই অধিকর্তাকে নিতে নির্দেশ দেন বিচারপতি লকুর ও বিচারপতি ললিত। আগামী ১২ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে বিচারপতিরা বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাতে থাকা ১২টি মামলার তদন্ত শেষ করে সিবিআইকে চার্জশিট জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: ‘বিদ্রোহী’দের মুখোমুখি প্রধান বিচারপতি মিশ্র
এর আগে মণিপুরে ভুয়ো সংঘর্ষ নিয়ে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জে এম লিংডো ও অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস এ কে সিংহকে নিয়ে তদন্ত কমিশন গড়া হয়েছিল। কমিশনের প্রতিবেদনও সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন (আফস্পা)-এর অপপ্রয়োগ নিয়ে তীব্র নিন্দা করে বেশ কিছু ঘটনাকে ভুয়ো সংঘর্ষ বলে চিহ্নিত করেছিল।