প্রতীকী ছবি।
শ্যাওলা কি উড়ে বেড়ায়!
শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের এমন পাল্টা প্রশ্নে কার্যত থম মেরেই রইলেন ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের (এএসআই) কৌঁসুলি। শেষমেষ তাই সব দোষ গিয়ে পড়ল ওই ‘মোজা’-র ঘাড়েই!
জৌলুস হারাচ্ছে শাহজাহানের সাধের তাজমহল। দিনে দিনে খানিক বাদামি আর সবজেটে হয়ে যাচ্ছে দুধসাদা মার্বেল পাথরের তৈরি এই স্মৃতিসৌধ। কিন্তু কেন এই হাল! সুপ্রিম কোর্টের এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এএসআই দায় চাপাল ‘নোংরা মোজা’ আর ‘শ্যাওলা’র উপরে।
সংস্থাটির দাবি, ভিআইপি ছাড়া আর কাউকে তাজমহলে ঢোকার জন্য আলাদা মোজা (এক বার ব্যবহারের মতো) দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। সাধারণ পর্যটকেরা নিজেদের মোজা পরেই ঢোকেন সেখানে। আর সেই কারণেই নোংরা হচ্ছে মহলের মেঝে। কিন্তু সৌধের উপরেও তো ছোপ পড়েছে! সেটা কেন? এএসআই-এর যুক্তি— উড়ে এসে জুড়ে বসেছে শ্যাওলা। আর ঠিক এর পরেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি এম বি লোকুর এবং বিচারপতি দীপক গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন ছুড়ে দেয়— ‘শ্যাওলা কি আজকাল উড়ে বেড়াচ্ছে?’ এএসআই-কে ভর্ৎসনার সুরেই কোর্ট বলে, ‘হয় নেই, অথবা দক্ষতা থাকলেও আপনারা তার ব্যবহার করছেন না।’
তাজের রক্ষণাবেক্ষণে এএসআই আদৌ যত্নশীল নয় বলে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন জানান পরিবেশবিদ এম সি মেটা। বুধবার সওয়াল-জবাব শেষে ডিভিশন বেঞ্চও বুঝিয়ে দিল— সংস্থাটির ‘দায়সারা’ মনোভাবে তারা অসন্তুষ্ট। এমনকি, রক্ষণাবেক্ষণের ভূমিকায় আদৌ আর এএসআই-কে রাখার প্রয়োজন আছে কি না, তা-ও কেন্দ্রের কাছে জানতে চাইল কোর্ট।
দিন কয়েক আগেই ঝড়ে ভেঙে গিয়েছিল তাজের একটি স্তম্ভ। সাদা মার্বেলের উপর ছোপ পড়া শুধু নয়, সেখানে ইদানীং পোকামাকড় আর মশার তাণ্ডবও যথেচ্ছ বেড়েছে বলে অভিযোগ। এ জন্য যমুনার দূষণ একটা বড় কারণ মেনে নিলেও, কোর্ট কাঠগড়ায় তুলছে এএসআই-কেই। এ দিন, কেন্দ্রের তরফে আইনজীবী অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এএনএস নদকর্নিকে কোর্ট স্পষ্ট জানায়, এএসআই ঠিকঠাক কাজ করলে তাজের আজ এই হাল হত না।
নদকর্নি জানান, তাজের হাল ফেরাতে আন্তর্জাতিক স্তরের বিশেষজ্ঞদের আনার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রক।