ভর্তুকিতে জমি নিয়ে গডে় ওঠা বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে কড়া নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের।
সরকারের কাছ থেকে কম টাকায় জমি নিয়ে তৈরি দিল্লির বেসরকারি হাসপাতালে গরিবদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হবে। সোমবার এই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সরকারের সঙ্গে চিকিৎসা সংক্রান্ত চুক্তি না মানলে আদালত অবমাননা হিসাবে ধরা হবে এবং শীর্ষ আদালতই গোটা বিষয়টির নজরদারি করবে বলেও কড়া নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
দিল্লিতে যে সব বেসরকারি হাসপাতাল সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি বা কম দামে জমি নিয়েছে, তাদের সঙ্গে ইন্ডোর এবং আউটডোরে চিকিৎসার নির্দিষ্ট চুক্তি রয়েছে। সেই চুক্তি অনেক হাসপাতালই মানছিল না বলে অভিযোগ। তার জেরেই সুপ্রিম কোর্ট সোমবার নির্দেশ দিয়েছে, সরকারের সঙ্গে এই চুক্তি মানতেই হবে। চুক্তি ভঙ্গ করলে কোনওভাবেই তা বরদাস্ত করা হবে না। আদালত অবমাননার ধারায় মামলা দায়ের হবে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
শীর্ষ আদালত এদিনের নির্দেশে আরও জানিয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালগুলিবিনামূল্যে গরিবদের চিকিৎসা দিচ্ছে কি না, নিয়মিত ব্যবধানে তার রিপোর্ট দিতে হবে দিল্লি সরকারকে। সরকার সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দেবে। সুপ্রিম কোর্ট সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখবে এবং ‘মনিটর’ করবে। রিপোর্টে সন্তুষ্ট হলে তবেই ছাড় পাবে হাসপাতালগুলি।
আরও পড়ুন: ২০১৯-এ অনিশ্চিত বিজেপির দেড়শো!
সরকারি সূত্রে খবর, দিল্লিতে ভর্তুকিতে, কম দামে বা নামমাত্র দাম দিয়ে জমি নিয়ে গড়ে উঠেছে ৪৩টি বেসরকারি হাসপাতাল। সেই হাসপাতালগুলির সঙ্গে সরকারের নির্দিষ্ট চুক্তি রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, ১০ শতাংশ বেড গরিবদের জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে। আউটডোরে এই হার ২৫ শতাংশ। উভয় ক্ষেত্রেই বিনা পয়সায় চিকিৎসা করাতে হবে। এই রকম প্রতিটি হাসপাতালে আলাদা ‘রেফারাল ডেস্ক’ রাখতে হবে, যেখানে সরকারি হাসপাতাল থেকে রেফার করা রোগীদের সবরকম সাহায্য করতে হবে। প্রতিদিন এই বিনা পয়সার বেড কতগুলি ফাঁকা রয়েছে, দিনে দু’বার তা নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতালে জানাতে হবে। মাসিক ৫০০০ টাকা বা তার কম আয়ের পরিবারের সদস্যরা বিনা পয়সায় চিকিৎসা পাবেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তান আমাদের বাঁচিয়ে দিল নিকৃষ্টতম হওয়া থেকে: অমর্ত্য সেন
দিল্লি সরকারের সঙ্গে এই ধরনের বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংঘাত নতুন নয়। ২০১৬ সালেই চিকিৎসা সংক্রান্ত এই চুক্তি না মানায় পাঁচটি বেসরকারি হাসপাতালকে ৬০০ কোটি টাকা জরিমানা করে দিল্লির কেজরীবাল সরকার। আবার এমন অনেক সংস্থাও রয়েছে, যারা সরকারের কাছ থেকে হাসপাতালের জন্য জমি নিয়েও ফেলে রেখেছে। এই রকম অন্তত ১৮টি জায়গায় ৫০ একর জমি দিয়েছে সরকার। ৪৪ বছর আগে দেওয়া সেই জমিই এবার ফেরত নিতে চাইছে আপ সরকার।
গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ