Sanjay Raut

ইন্দিরা-করিম যোগ: মন্তব্য ফেরালেন রাউত

রাউতের মন্তব্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের কাছে ক্ষোভ জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও রাজ্যের মন্ত্রী বালসাহেব থোরট।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৫১
Share:

শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত।—ফাইল চিত্র।

মুম্বইয়ের গ্যাংস্টার করিম লালার সঙ্গে দেখা করতেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী— শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতের এমন মন্তব্য নিয়ে তুলকালাম মহারাষ্ট্রে। জোট শরিক কংগ্রেসের হুঁশিয়ারির পরে দুঃখপ্রকাশ করতে হয়েছে শিবসেনা নেতাকে। রাউত অবশ্য দাবি করেছেন, ইন্দিরার প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা রয়েছে। তাঁর মন্তব্যকে বিকৃত করা হয়েছে।

Advertisement

একটি সংবাদপত্রের অনুষ্ঠানে বুধবার রাউত বলেছিলেন, ‘‘গ্যাংস্টার হাজি মাস্তান যখন মহারাষ্ট্রের সচিবালয়ে পৌঁছতেন, গোটা সচিবালয় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে নেমে আসত। ইন্দিরা গাঁধীও দক্ষিণ মুম্বইয়ের পয়ধনিতে করিম লালার সঙ্গে দেখা করতেন।’’ শিবসেনা নেতার কথায়, ‘‘মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার কে হবেন, সচিবালয়ে কারা বসবেন—এই গ্যাংস্টারেরাই সে সব ঠিক করতেন।’’

রাউতের মন্তব্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের কাছে ক্ষোভ জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও রাজ্যের মন্ত্রী বালসাহেব থোরট। জানিয়ে দেন ইন্দিরাকে নিয়ে এমন মন্তব্য বরদাস্ত করবে না কংগ্রেস। তাঁর দাবি, শিবসেনা নেতা যা বলেছেন, তা মিথ্যে তো বটেই, উল্টে সত্য হল, গ্যাংস্টারদের কোমর ভেঙে দিতে পদক্ষেপ করেছিলেন ইন্দিরা। মহারাষ্ট্রের আর এক শীর্ষস্থানীয় কংগ্রেস নেতা মিলিন্দ দেওরা বলেন, ‘‘না জেনে বুঝেই এমন মন্তব্য করেছেন রাউত। রাজনীতিকদের এমন কথা বলা উচিত নয়।’’ এক কদম এগিয়ে শিবসেনা থেকে কংগ্রেসে আসা নেতা সঞ্জয় নিরুপম উদ্ধবের দলকে হুমকি দেন, ‘‘ইন্দিরা গাঁধীর বিরুদ্ধে ভুল প্রচার চালালে রাউতকে অনুশোচনা করতে হবে।’’

Advertisement

এরই মধ্যে এবিপি নিউজ টেলিভিশন চ্যানেলে সামনে আসে ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রপতি ভবনে পদ্ম পুরস্কারের সময়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর সঙ্গে করিম লালার ছবি। সেখানে উপস্থিত অভিনেতা, বিজয়ওয়াড়া থেকে নির্বাচিত এক বাঙালি সাংসদ।

বিজেপি নেতা ও মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস দাবি করেন, শিবসেনা নেতার মন্তব্য নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে কংগ্রেসকে। মুম্বইয়ের ডনেরা কংগ্রেসকে অর্থসাহায্য করতেন কি না, তা স্পষ্ট করতে হবে সনিয়া, রাহুল গাঁধীদের। বিতর্কের মধ্যে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন রাউত। দুঃখপ্রকাশও করেন। বলেন, ‘‘আমার কথায় যদি ইন্দিরা গাঁধীর মতো নেত্রীর সম্মান নষ্ট হয়ে থাকে কিংবা কেউ দুঃখ পেয়ে থাকেন, তা হলে বিবৃতি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। তবে অতীতে আমি ইন্দিরার পক্ষে অনেক কথা বলেছি। যাঁরা তাঁর সম্মান নষ্ট করতে চেয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে তর্কও করেছি। তবে সে সময়ে কংগ্রেসের অনেক নেতা চুপ করে থাকতেন।’’ দুঃখপ্রকাশের আগে রাউত অবশ্য দাবি করেন, মুম্বইয়ের ইতিহাস যাঁরা জানেন না, তাঁরাই তাঁর কথাকে বিকৃত করেছেন। কারণ, তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, করিম লালা ‘পাখতুন-ই-হিন্দ’ নামে একটি সংগঠন করতেন। পঠানদের নেতা হিসেবেই অন্য অনেক নেতা নেত্রীর মতো তিনি দেখা করতেন ইন্দিরার সঙ্গে। এর পরেই এবিপি নিউজ চ্যানেলে সামনে আসে আর একটি ছবি। ১৯৮০ সালে করিম লালার সঙ্গে শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বালসাহেব ঠাকরের।

ষাট থেকে আশির দশকের মধ্যে যে তিন জন ডন মুম্বইয়ের অন্ধকার জগতকে নিয়ন্ত্রণ করতেন, করিম লালা ছিলেন তাঁদের অন্যতম। বাকি দু’জন মাস্তান মির্জা ওরফে হাজি মাস্তান এবং বরদারাজন মুদালিয়র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement