কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শিসসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত। ফাইল চিত্র।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সাভারকর সম্পর্কিত মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করল জোটসঙ্গী উদ্ধবপন্থী শিবসেনা। গত বৃহস্পতিবারই রাহুলের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছিলেন বালাসাহেব-পুত্র উদ্ধব ঠাকরে। রাহুলের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেননি কিছু দিন আগে রাহুলের সঙ্গে ভারত জোড়ো যাত্রায় হাঁটা উদ্ধব-পুত্র আদিত্য ঠাকরেও। শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের সামনে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতও রাহুলের সাভারকর সম্পর্কিত বক্তব্য ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ জানিয়ে দিলেন।
শিবসেনার তরফে এমন জোরালো প্রতিক্রিয়া আসার পরে মহারাষ্ট্রের মহা বিকাশ অঘাডী বা বিরোধী জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অবশ্য শুক্রবার যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ দাবি করেন, শিবসেনার সঙ্গে জোট অক্ষুণ্ণ থাকছে। এ বিষয়ে রাউতের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিন। দীর্ঘ কথোপকথনে জয়রাম রাউতকে জিজ্ঞাসা করেন, রাহুলের মন্তব্য জোটে কোনও প্রভাব ফেলবে কি না। জয়রামের দাবি, রাউত প্রত্যুত্তরে তাঁকে ‘না’ বলেন।
শুক্রবার রাউত সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “রাহুলের বক্তব্য একেবারেই সমর্থন করা যায় না। মহারাষ্ট্রের কোনও কংগ্রেস নেতাও এ ব্যাপারে রাহুলকে সমর্থন করবেন না।” একই সঙ্গে রাউত জানান, শিবসেনা সাভারকরের আসল হিন্দুত্ববাদের আদর্শকে মেনে চলে। বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি জানান, ‘নকল হিন্দুত্ববাদী’রা শাসনক্ষমতায় থাকলেও সাভারকরকে ভারতরত্ন দেওয়ার কথা ভাবেনি।
সাভারকর শুক্রবার জানান, কংগ্রেস এবং শিবসেনার বেশ কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য আছে এবং থাকবে। কিন্তু বৃহত্তর লক্ষ্যে একদা যুযুধান থাকলেও তারা জোট গড়েছেন বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার ভারত জোড়ো যাত্রার ফাঁকে রাহুল সাংবাদিক বৈঠক করে সঙ্ঘের তাত্ত্বিক নেতা সাভারকরকে নিশানা করেন। নরেন্দ্র মোদীর ‘মতাদর্শগত গুরু’ বলে পরিচিত সাভারকরের বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের কাছে ক্ষমাভিক্ষার অভিযোগ তুলে রাহুল বলেন, “সাভারকর জেল থেকে ব্রিটিশদের চিঠি লিখে বলেছিলেন, তিনি ব্রিটিশদের অনুগত হিসেবে থাকতে চান।” রাহুল আরও বলেন, “সাভারকর ব্রিটিশদের সাহায্য করেছিলেন। উনি ইংরেজদের চিঠি লিখে বলেছিলেন, “স্যর, আমি আপনাদের চাকর হয়ে থাকতে চাই। যখন উনি চিঠিতে সই করছেন, তখন এর পিছনে কী কারণ ছিল? ভয়। উনি ব্রিটিশদের ভয় পেয়েছিলেন।’’
রাহুল যখন মহারাষ্ট্রে এই কথা বলছেন, তখন উদ্ধব জানান, তিনি রাহুলের সঙ্গে একমত নন। তাঁর বক্তব্য, “আমরা সাভারকরকে সম্মান করি। ব্রিটিশদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া স্বাধীনতা বজায় রাখতেই আমরা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেছিলাম।’’