অখিলেশ যাদব। —ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিএসপি সভানেত্রী মায়াবতীর উদ্দেশে ‘আপত্তিকর মন্তব্য’ করার অভিযোগ তুলে মন্ত-এর বিজেপি বিধায়ক রাজেশ চৌধরির বিরুদ্ধে এ বার মানহানির মামলা করার ডাক দিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব।
রাজ্যের ১০টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনের আগে প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপিকে চাপে ফেলতেই ‘বুয়া’ মায়াবতীর বিরুদ্ধে করা একটি মন্তব্য নিয়ে ‘ভাতিজা’ অখিলেশের এই আক্রমণাত্মক কৌশল বলে মনে করছে বিরোধী শিবির। পাশাপাশি, উপনির্বাচনে মায়ার দলের একাংশের সমর্থনও এর ফলে অখিলেশের দিকে ঝুঁকবে বলে আশা এসপি শিবিরের অন্দরে।
নিজের এক্স হ্যান্ডলে বিজেপি বিধায়ক রাজেশ চৌধরির একটি বক্তব্যের ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন অখিলেশ। সেখানে একটি টিভি চ্যানেলের বিতর্কে ওই বিজেপি বিধায়ককে বলতে শোনা গিয়েছে যে, ‘‘কোনও সন্দেহ নেই যে মায়াবতী চার বার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন এবং আমরাই তাঁকে প্রথম বার মুখ্যমন্ত্রী করেছিলাম। এটা আমাদের ভুল হয়েছে।’’ একই সঙ্গে মায়াবতীকে ‘উত্তরপ্রদেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত’ মুখ্যমন্ত্রী বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি।
এই বক্তব্যকেই হাতিয়ার করে অখিলেশ এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘বিজেপি বিধায়ক রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে যে কুমন্তব্য করেছেন, তা থেকেই স্পষ্ট তাঁরা কতটা মহিলাবিদ্বেষী, বিশেষ করে যাঁরা পিছিয়ে পড়া অংশ থেকে এসেছেন।’’ তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক মতপার্থক্য এক জিনিস, কিন্তু একজন মহিলাকে এ ভাবে অপমান করার অধিকার কারও নেই।’’ এর পাশাপাশি, বিএসপি সভানেত্রী মায়াবতীকে মুখ্যমন্ত্রী করা ভুল হয়েছিল বলে ওই বিধায়ক যে মন্তব্য করেছেন যে, তা জনাদেশের অপমান বলেও ব্যাখ্যা করেছেন অখিলেশ।
এসপি-প্রধানের এই মন্তব্যের পরেই তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। এমনিতেই মায়াবতী বহু বছর ধরেই নির্বাচনে এমন ভাবে পদক্ষেপ করছেন, যার ফলে পরোক্ষে ভোটভাগের সুবিধা পাচ্ছে বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে বহু বার তাঁকে নিশানাও করেছেন বিরোধী নেতারা।
অনেকেই মনে করছেন, এ ভাবে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে গিয়ে শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছেন মায়াবতী। যদিও মায়াবতীর দলিত ভোটব্যাঙ্ক এখনও অনেকটাই পাশে রয়েছে।
এমন অবস্থায় রাজ্যের ১০টি বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে বিজেপি বিধায়কের একটি মন্তব্যকে হাতিয়ার করে যে ভাবে অখিলেশ সরব হয়েছেন, তার পিছনে এক দিকে যেমন ওই দলিত ভোটকে নিজের দিকে টানার অঙ্ক রয়েছে, তেমনই মায়াবতী যাতে বিজেপির দিকে বেশি ঝুঁকে না যান, সেই কৌশলও রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।