সল্টলেকে অ্যাঞ্জেলা মার্কেন্টাইলের দফতর। —নিজস্ব চিত্র।
সদ্য সিবিআই ডিরেক্টর পদে অন্তর্বর্তী দায়িত্বপ্রাপ্ত নাগেশ্বর রাওয়ের কলকাতা যোগ!
অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী এম সন্ধ্যা অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর জেলায় জমি কিনেছিলেন ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে এবং সেই টাকা ঋণ হিসেবে নিয়েছিলেন কলকাতার অ্যাঞ্জেলা মার্কেন্টাইলের কাছ থেকে।
ইন্টারনেটে অ্যাঞ্জেলা-র ঠিকানা, সল্টলেকের সিএ ব্লক। বৃহস্পতিবার সেই ঠিকানায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, চারতলা বাড়ি। বাইরে বড় দু’টি গেট।
বিধাননগর পুরসভার নথি অনুযায়ী, বাড়ির মালিক প্রবীণ আগরওয়াল। সংস্থার নথি বলছে, অ্যাঞ্জেলা-র অন্যতম ডিরেক্টর হিসেবে প্রবীণ যোগ দিয়েছেন ২০১৬ সালে। বেল বাজাতে প্রথমে এক জন উঁকি মেরে জানতে চান, কাকে দরকার। প্রবীণের নাম করায় দাঁড়াতে বলা হয়। কিছু ক্ষণ পরে এক জনকে দেখা যায় গেটের অন্য প্রান্তে। সুশান্ত বক্সী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে তিনি জানান, অ্যাঞ্জেলা-র দফতর এই ঠিকানায় বলা থাকলেও অফিস এখনও তৈরি হচ্ছে। বাইরে থেকে দেখাও গিয়েছে, ভিতরে কাচ দিয়ে ঘিরে অফিস তৈরির কাজ চলছে।
প্রবীণবাবুরা কোথায়? সুশান্তবাবুর উত্তর, ‘‘জানি না। এখানে নেই। থাকেনও না।’’ কোথায় থাকেন? উত্তর আসে, ‘‘ওড়িশায়। ওই দুর্গাপুজো, দীপাবলির সময়ে কখনও আসেন সপরিবার। বছরের অন্য সময় চারতলা বাড়ি ফাঁকা পড়ে থাকে।’’ প্রবীণবাবুকে যোগাযোগ করার কোনও ফোন নম্বর? সুশান্তবাবুর দাবি, ‘‘আমার জানা নেই।’’ যদি বাড়িতে আগুন লাগে বা দুর্ঘটনা ঘটে, কাকে জানাবেন? উত্তর, ‘‘দমকলকে।’’ মালিক কি জানতেই পারবেন না? জবাব আসে, ‘‘তিনি যখন আসবেন, তখন দেখবেন।’’
সিএ ব্লকের বাসিন্দাদের একাংশের অবশ্য দাবি, প্রবীণবাবু এই বাড়িতেই থাকেন। এমনকি, এ বার দুর্গাপুজোয় ব্লকে গুরুদায়িত্বও পালন করেছেন। চাঁদা দিয়েছেন মোটা টাকার। বছর চারেক আগে গৃহপ্রবেশের সময়ে চার দিন ধরে উৎসব হয়েছিল এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কেউ কেউ এসেছিলেন বলেও স্থানীয়দের একাংশের দাবি। জানা গিয়েছে, পূর্বতন বাম সরকারের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির কাছ থেকে এই জমি কিনেছিলেন প্রবীণ।
নাগেশ্বর এক সময়ে সিআরপি-তে আইজি হিসেবে ছিলেন। তখন তিনি পূর্ব ভারতে কর্মরত। কলকাতাই ছিল সদর দফতর। অভিযোগ, সেই সময়ে নিজের সম্পত্তির হিসেব দিতে গিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রী অ্যাঞ্জেলা-র কাছ থেকে ঋণ নিয়ে জমি কিনেছিলেন। যদিও দক্ষিণ ভারতের একটি সংবাদ চ্যানেল তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, ওই সংস্থা থেকে থেকে ঋণ নয়, উল্টে ৩৮ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন নাগেশ্বরের স্ত্রী। এই সংস্থার শেয়ারহোল্ডারের তালিকাতেও নাগেশ্বরের শ্বশুরমশাইয়ের নাম রয়েছে বলে চ্যানেলের দাবি। নাগেশ্বর-পরিবারের তরফে অবশ্য এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।