ফের তাঁরা কাছাকাছি, সচিন পাইলট ও অশোক গহলৌত। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
প্রায় দেড় বছর ধরে নাকি তাঁদের বাক্যালাপ ছিল না! মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরাসরি পরস্পরকে সম্বোধনও করতেন না অশোক গহলৌত এবং সচিন পাইলট! কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের হস্তক্ষেপে ‘বিদ্রোহে’ ইতি টানার পরে বৃহস্পতিবার জয়পুরে মুখ্যমন্ত্রী গহলৌতের মুখোমুখি হলেন সচিন। আজ বিকেলে গহলৌতের বাড়িতে কংগ্রেস বিধায়কদের এই বৈঠকে পাশাপাশি দেখা গেল দু’জনকে।
কংগ্রেস শিবিরে ‘পুনর্মিলনের’ জেরে রাজস্থানে বিজেপির ক্ষমতা দখলের সম্ভাবনা কার্যত শেষ। তবু এই পরিস্থিতিতে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে গহলৌত সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চলেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। আজ বিজেপি পরিষদীয় দলের বৈঠকের পরে রাজস্থান বিধানসভার বিরোধী দলনেতা গুলাবচন্দ কঠেরিয়া এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজেও হাজির ছিলেন বৈঠকে। রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বের একাংশের দাবি, যদি বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস বিধায়কদের কয়েকজন সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেন সেটাই হবে ‘নৈতিক জয়’।
রাত পোহালেই বিধানসভার অধিবেশন। কিন্তু সেই টানটান উত্তেজনা নেই মোটেই। সোমবার প্রিয়ঙ্কা বঢরার সঙ্গে বৈঠকের পরে সচিন এবং তাঁর অনুগামী বিধায়কেরা কংগ্রেস না ছাড়ার কথা প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে গহলৌত শিবিরে এখন কার্যত যুদ্ধজয়ের আবহ। গত এক মাস ধরে সচিন-সহ বিদ্রোহী শিবিরের বিরুদ্ধে লাগাতার তোপ দাগার পরে সন্ধির ‘মুডে’ ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও। দলের বিধায়কদের উদ্দেশে আজ সকালে টুইটারে তাঁর বার্তা— ‘‘ভুলে যান এবং মাফ করে দিন।’’ গহলৌত লিখেছেন, ‘‘গত এক মাস ধরে সনিয়া গাঁধী এবং রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস গণতন্ত্র বাঁচানোর লড়াই লড়েছে। দলের অন্দরে যা-ই ঘটুক না কেন, দেশ এবং রাজস্থানের জনতার কথা ভেবে ভুলে যাওয়া এবং মাফ করার মানসিকতা গ্রহণ করতে হবে আমাদের।’’ কংগ্রেস পরিষদীয় দলের তরফে এদিন সচিন অনুগামী দুই বিধায়কের সাসপেনশন প্রত্যাহারের জন্য স্পিকারের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘কর ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ করতেই হবে’, নয়া প্ল্যাটফর্ম চালু করে বললেন মোদী
সচিন পাইলট-সহ ১৯ জন বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়ক হরিয়ানার রিসর্টে ডেরা বাঁধার পরেই রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রের সঙ্গে দেখা করেছিলেন গহলৌত। আস্থা প্রস্তাব পেশের জন্য বিধানসভার অধিবেশন ডাকারও অনুরোধ করেছিলেন। সে সময় বিরোধী দলনেতা গুলাবচন্দ বলেছিলেন, ‘‘আমরা তো সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনিনি। তবে কেন তাড়াহুড়ো করে বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে হবে?’’ বিজেপির ‘বার্তা’ পেয়ে রাজ্যপালও পরিষদীয় বিধি মেনে অধিবেশন ডাকার জন্য ২১ দিনের সময়সীমা দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ভিসা নীতি শিথিল ট্রাম্পের, কিছুটা স্বস্তি আমেরিকায় কর্মরত ভারতীয়দের
কংগ্রেসে ভাঙনের সম্ভাবনা দেখে রাজস্থানের বিজেপি বিধায়কদেরও পাঠানো হয়েছিল গুজরাতের রিসর্টে। কিন্তু প্রিয়ঙ্কার সফল ‘দৌত্যে’ আপাতত অনেকটাই ব্যাকফুটে বিজেপি। দলের বিধায়কদের জয়পুরে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আজ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশও অশোক গহলৌতকে স্বস্তি দিয়েছে। কংগ্রেসে যোগদানকারী ছ’জন বিএসপি বিধায়কের আগামীকালের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে একটি আবেদন দায়ের করা হয়েছিল বিজেপির তরফে। কিন্তু আজ এ বিষয়ে স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার করেছে সুপ্রিম কোর্ট।