বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ফাইল চিত্র।
আগামী মাসে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের রাশিয়া সফরের প্রস্তুতি চলছে। বিদেশ মন্ত্রকের খবর অনুযায়ী, জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তা, বাণিজ্য এবং অন্য কৌশলগত বিষয় নিয়ে ওই সফরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে। গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর উথালপাথাল হয়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি। ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক এখন আমেরিকা তথা পশ্চিম বিশ্বের আতশকাচের নীচে। স্বাভাবিক ভাবেই জয়শঙ্করের সম্ভাব্য সফর নিয়ে কূটনৈতিক জল্পনা শুরু হয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালীন ভারত থেকে কোনও শীর্ষ পর্যায়ের মস্কো সফর হয়নি। গত মাসে সমরখন্দে সাংহাই কো-অপারেশনের পার্শ্ববৈঠকে মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সূত্রের খবর, এই বছরের শেষে আবার মোদী-পুতিনের বৈঠকের চেষ্টা চলছে। তার আগে জয়শঙ্করের এই সফর সেই শীর্ষ বৈঠকের ভিত তৈরি করবে।
বিদেশ মন্ত্রকের মতে, জয়শঙ্করের রাশিয়া সফরে সে দেশ থেকে অশোধিত তেল আমদানির বিষয়টির পাশাপাশি, গুরুত্ব দেওয়া হবে হিংসা কমিয়ে আলোচনায় বসার ব্যাপারকেও। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের রাশিয়া সংক্রান্ত ভোটাভুটিতে ধারাবাহিক ভাবে ভারত ভোটদানে বিরত থেকে ভারসাম্যের অবস্থান নিয়ে চলেছে। হিংসা অবিলম্বে বন্ধ করে আলোচনা এবং কূটনীতির রাস্তায় ফেরার ডাক দিয়ে গিয়েছে সাউথ ব্লক। পুতিনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে মোদী জানিয়েছেন, এখন যুদ্ধের সময় নয়। খাদ্য, জ্বালানি এবং সারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সময়। কিন্তু মুখে এ কথা বলেও রাষ্ট্রপুঞ্জে ভোটভুটির সময় রাশিয়া-বিরোধী ভোট ভারত দেয়নি। বরং এই যুদ্ধের সময়টা জাতীয় শক্তি নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়ে অপেক্ষাকৃত সস্তায় মস্কো থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি আমদানি করেছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরুর পরে অবশ্য বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন জায়গায় জয়শঙ্কর আর রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ চার বার বৈঠক করেছেন। নয়াদিল্লিতেও এসেছেন রুশ বিদেশমন্ত্রী। এর মধ্যে মস্কো সফর সেরে এসেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। দু’দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সমঝোতা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে যান জয়শঙ্কর। সেখানে লাভরভের সঙ্গে বৈঠকের পর পশ্চিমকে বার্তা দিয়ে ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেছিলেন, “বহু ক্ষেত্রেই রাশিয়া ভারতের বৃহৎ অংশীদার। আমরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছি।”