ফাইল চিত্র।
ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বের সুমিতে আটকে থাকা প্রায় ৬০০ পড়ুয়াকে শুক্রবারও উদ্ধার করা গেল না।
বৃহস্পতিবার রাতের দিকে রুশ সেনাবাহিনী সুমিতে বোমা ফেলে। সুমি স্টেট ইউনিভার্সিটি হস্টেলের পাশেই এক কারখানায় সেই বোমা পড়েছিল। স্বভাবতই পড়ুয়ারা খুব আতঙ্কিত। বোমা পড়ার পরেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। জলের সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার পড়ুয়ারা জানালেন, ইন্টারনেট পরিষেবাও খুবই অনিয়মিত। বিদ্যুৎ পরিষেবা না থাকার জন্য প্রচণ্ড শীতের মধ্যে হিটিং সিস্টেমও চলছে না। যদিও গত এক সপ্তাহ ধরে যুদ্ধের আতঙ্কে বাঙ্কারে দিন কাটাচ্ছেন অধিকাংশ পড়ুয়া।
সুমির কাছে রুশ সীমান্ত। রাশিয়া এ দিক থেকেই আক্রমণ শানাচ্ছে। বিদেশি পড়ুয়ারা দেশে ফিরছেন মূলত ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে। সেখান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে রোমানিয়া, হাঙ্গেরি অথবা পোল্যান্ড গিয়ে দেশে ফেরার উড়ান ধরছেন তাঁরা। ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব দিকের সুমি থেকে পশ্চিম সীমান্তের দূরত্ব প্রায় এক হাজার কিলোমিটার। পুরো ইউক্রেনের উপর দিয়ে পেরোতে হবে এই পথ। এবং এই পথেরই বিভিন্ন অংশে যুদ্ধ চলছে। তাই অপেক্ষাকৃত কাছের রাশিয়া সীমান্ত দিয়ে তাঁদের উদ্ধারের জন্য বারবার আবেদন জানাচ্ছেন পড়ুয়ারা।
এ দিন মরিয়া পড়ুয়ারা সামাজিক মাধ্যমে বারবার তাঁদের পরিস্থিতির ভিডিয়ো পোস্ট করে উদ্ধারের আর্জি জানিয়েছেন। সুমি স্টেট ইউনিভার্সিটির ডাক্তারির ছাত্রী শিবাঙ্গী শিবু সামাজিক মাধ্যমে এ দিন এক ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, ‘‘আমরা হেঁটে সীমান্ত পর্যন্ত চলে যাব। দয়া করে আমাদের সেই সুযোগটুকু করে দিন।’’ সুমি থেকে রাশিয়া সীমান্ত ৫০ কিলোমিটারেরও বেশি দূর।
১৫ বছর ধরে সুমিতে রয়েছেন সত্যম গঙ্গোপাধ্যায়। এ দিন তিনি জানালেন, সপরিবার নিজের গাড়ি নিয়ে সীমান্তে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সম্ভব হচ্ছে না। রুশ সৈন্যরা শহরে ছড়িয়ে রয়েছে। গুলিও চালাচ্ছে। সত্যমবাবু অপেক্ষা করছেন ভারত সরকার এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ করে, তার জন্য।
সুমি স্টেট ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সিয়োনা গণেশন এ দিন জানালেন, বেলার দিকে বিদ্যুৎ ফিরলেও জল সরবরাহ শুরু হয়নি। অন্য সব পড়ুয়ার সঙ্গে সিয়োনাও গত সপ্তাহ থেকে বাঙ্কারে রয়েছেন।
এ দিন ভারতের বিদেশ মন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে, ইউক্রেন এবং রাশিয়া যদি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা না করে, তা হলে এই ছাত্রছাত্রীদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। স্বভাবতই এতে হতাশ পড়ুয়ারা। তাঁদের একটাই আবেদন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধ বিধ্বস্ত সুমি থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হোক।