‘প্রতিবাদ না করলে ফের অসভ্যতার শিকার হতে হত’

#মিটু আন্দোলন তখন ভবিষ্যতের গর্ভে। স্যোশাল মিডিয়া কী বস্তু, পৃথিবীর কাছে অজানা। সেই সময়ে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন তিনি। রূপান দেওল বাজাজের নাছোড় লড়াইয়ে দোষী সাব্যস্ত হতে হয়েছিল পঞ্জাবের তৎকালীন ‘সুপার কপ’ কে পি এস গিলকে।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৩৫
Share:

রূপান দেওল বাজাজ

#মিটু আন্দোলন তখন ভবিষ্যতের গর্ভে। স্যোশাল মিডিয়া কী বস্তু, পৃথিবীর কাছে অজানা। সেই সময়ে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন তিনি। রূপান দেওল বাজাজের নাছোড় লড়াইয়ে দোষী সাব্যস্ত হতে হয়েছিল পঞ্জাবের তৎকালীন ‘সুপার কপ’ কে পি এস গিলকে।

Advertisement

আজ #মিটু আন্দোলন দেখে দৃশ্যতই আনন্দিত রূপান। মহিলারা যে ভাবে মুখ খুলছেন, তাতে আশাবাদী তিনি মনে করছেন, বিকৃতমস্তিষ্ক পুরুষেরা এ বার ভয় পাবেন। চণ্ডীগড় থেকে ফোনে জানালেন, ‘‘তিরিশ বছর আগে লড়াইটা আদৌ সহজ ছিল না। এখন ছবি পাল্টাচ্ছে। মেয়েরা হেনস্থার কথা যত বলবেন, ততই সুরক্ষিত হবে নারীর সম্মান।’’

সালটা ১৯৮৮। পঞ্জাবের এক আমলার দেওয়া পার্টিতে আইএএস রূপানের সঙ্গে অভব্যতা করেন পঞ্জাবের তৎকালীন ডিজিপি গিল। খলিস্তান আন্দোলন দমনে সফল গিল তখন সরকারের চোখের মণি। ফলে মুখ্যসচিব থেকে রাজ্যপাল সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়, কাউকেই পাশে পাননি রূপান। সব মহল থেকেই পরামর্শ আসে, ব্যাপারটা আপসে মিটিয়ে নেওয়া ভাল। সাক্ষীর অভাবে হার হয় নিম্ন আদালতে, হাইকোর্টেও। লেফটেন্যান্ট কর্নেলের মেয়ে কিন্তু লড়াই ছাড়েননি। শেষে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি এ এস আনন্দ ও বিচারপতি এন কে মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চ ঐতিহাসিক রায় দিয়ে জানায়, নির্যাতিতার বয়ান যদি বিশ্বাসযোগ্য হয়, তা হলে সাক্ষীর প্রয়োজন নেই। দোষী সাব্যস্ত হন গিল।

Advertisement

ডাকসাইটে আমলা রূপান নিজে ছিলেন অর্থ দফতরের কমিশনার পদে। সেখানেও তাঁর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি ছিল, দফতরের কোনও পুরুষ কর্মীর বিরুদ্ধে কোনও মহিলার অভিযোগ এলেই সাসপেন্ড করা হবে তাঁকে। রূপানের দায়িত্বকালে কোনও পুরুষ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠেনি।

৭৩ বছরের রূপান মেতে রয়েছেন বাবার অ্যাকাডেমির কাজে। যেখানে তরুণদের সেনা ও আধাসেনায় ভর্তির জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মিটু প্রজন্মের জন্য রূপানের বার্তা, ‘‘আমার সঙ্গে যা হয়েছিল, তা সকলের সামনে হয়েছিল। প্রতিবাদ না করলে ভবিষ্যতে ফের অসভ্যতার শিকার হতে হত আমায়। অধস্তনদের কাছেও সম্মান থাকত না। মেনে নেওয়ার অর্থই হল ‘চলতা হ্যায়’ মনোভাবকে প্রশ্রয় দেওয়া।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement