প্রতীকী ছবি।
নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্থাপত্যবিদ্যার পড়াশোনাতেও পরিবর্তন আনল সংশ্লিষ্ট পরিষদ (কাউন্সিল অব আর্কিটেকচার)। এই বিষয়ে শিক্ষার নতুন ন্যূনতম মান বাঁধতে জারি করা নয়া নিয়ম অনুযায়ী, স্নাতক স্তরের পাঁচ বছরের পাঠ্যক্রমের প্রথম তিন বছর সফল ভাবে শেষ করার পরে বাকিটুকু আর পড়তে না-পারলেও কোনও ডিগ্রি ছাড়া একেবারে খালি হাতে বেরোতে হবে না পড়ুয়াকে। কোন ডিগ্রি দেওয়া হবে, তা ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়। শতাংশে নম্বরের হিসেব কষার পরিবর্তে ব্যবহার করা হবে গড় পুঞ্জীভূত গ্রেডের পদ্ধতি (সিজিপিএ)। অষ্টম ও নবম সিমেস্টারে জোর দেওয়া হবে হাতে-কলমে কাজ শেখার উপরে।
নতুন শিক্ষা নীতি চালুর পরে যে দ্রুততার সঙ্গে স্থাপত্যবিদ্যার এই পরিষদ তা গ্রহণ করেছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক। মঙ্গলবার এই উপলক্ষে ভিডিয়ো-বার্তায় তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ১৯৮৬ সালের পরে দেশ যেমন এই সবে মাত্র নতুন শিক্ষা নীতি পেয়েছে, তেমনই স্থাপত্যবিদ্যার পড়াশোনায় এই বদলও ১৯৮৩ সালের পরে প্রথম। কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন, সরকার যেখানে নতুন শিক্ষা নীতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রত্যেক রাজ্য সমেত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এগোনোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেখানে এমন তাড়াতাড়িতে একটি বিষয়ে পড়াশোনার ধাঁচ বদলে দেওয়া সেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতির লক্ষণ কি?
এ দিনের বক্তৃতায় স্থাপত্যবিদ্যায় ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরতে গিয়ে মন্ত্রী কখনও ইন্দোনেশিয়ার মন্দিরের কথা টেনে এনেছেন, কখনও আবার উল্লেখ করেছেন কেদারনাথের প্রসঙ্গ। দাবি করেছেন, উৎকৃষ্ট ও মজবুত স্থাপত্যের জন্যই তা রক্ষা পেয়েছিল হড়পা বান থেকে। কিন্তু সেখানেও প্রশ্ন উঠেছে। এ দেশের স্থাপত্যের উজ্জ্বল উদাহরণ কি শুধু মন্দিরেই আটকে? অনুষ্ঠান শুরুও হয়েছে এই দিন কোন পক্ষের, কোন যুগাব্দের, কত বিক্রম সম্বতের কোন তিথি তা জানিয়ে!
এ দিনের আর এক অনলাইন-অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর দাবি, মহাত্মা গাঁধী স্বয়ং মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার পক্ষপাতী ছিলেন। নতুন শিক্ষা নীতিতে তার পথ প্রশস্ত করা হয়েছে। যাতে পড়া বুঝতে সুবিধার পাশাপাশি অন্তত বাংলা, তামিল-সহ ২২টি ‘মূল’ ভাষার সঙ্গে পরিচিত হয় আগামী প্রজন্ম। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, মুখে এ কথা বললেও আদপে কৌশলে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার পথ তৈরি করছে মোদী সরকার।