বৃষ্টির শব্দ ভেদ করেও কত কবিতা এখনও ভেসে আসে মাজার-ই-গালিবে। দিল্লির হজরত নিজামুদ্দিনের এই সমাধিতেই রয়েছে মির্জা গালিবের দেহ।
দুই শতাব্দী ধরে ভারতীয় সংস্কৃতিতে মিশে গিয়েছেন গালিব। স্বাভাবিক ভাবে পাঠ্যপুস্তকেও স্থান পেয়েছেন তিনি। কিন্তু এখন সেই পাঠ্যপুস্তক থেকেই তাঁকে সরাতে চায় আরএসএস। সঙ্ঘের শিক্ষা সংস্কৃতি উত্থান ন্যাস সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে চিঠি লিখে জানিয়েছে, এনসিইআরটি পাঠ্যপুস্তকের হিন্দি বই থেকে বাদ দিতে হবে যাবতীয় উর্দু, ফারসি, ইংরেজি শব্দ-কবিতা। আর সেটি হলে কোপ পড়বে মির্জা গালিবের কবিতার উপরেও। ন্যাসের দীনানাথ বাটরা জানিয়েছেন, এনসিইআরটি-র প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তক তিনি পড়েছেন। সেখানে হিন্দি বইতে অনেক ‘বিদেশি’ ভাষা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার যখন নতুন শিক্ষা নীতি তৈরি করছে, সেই সময়ে হিন্দি বইতে বাকি ভাষার প্রয়োগ বন্ধ করা উচিত। কারণ, তা না হলে হিন্দি ভাষার উপরে আগ্রহ কমে যাবে ছাত্র-ছাত্রীদের। এমন যে ক’টি ‘বিদেশি’ ভাষা রয়েছে, সেগুলি চিহ্নিত করে তিনি আবার কুড়ি পাতার পুস্তিকাও প্রকাশ করেছেন। তার ভিত্তিতে এর সংশোধন দরকার বলে কেন্দ্রের কাছে দরবার করেছেন বাটরা। তিনি বলেন, ‘‘সরকারের কমিটি যদি গোটা বিষয়টি ঠিকমতো পর্যালোচনা করে, তাহলে এই সংশোধন করে নতুন পাঠ্যপুস্তক পরের বছর থেকে চালু করা যায়।’’
আরও পড়ুন: এগিয়ে এল সর্বদল
মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষায় গেরুয়াকরণ করার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে এই দীনানাথের উপরেই। সেই সময় কেন্দ্রের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন স্মৃতি ইরানি। সরকারের এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর দীনানাথ দাবি করেছিলেন, এত দিন ধরে যে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ শিক্ষাব্যবস্থা চলছিল তার সংশোধনে পদক্ষেপ করছে স্মৃতির মন্ত্রক। বিতর্কের জেরে স্মৃতিকে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক থেকে সরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর এখন সতর্ক পদক্ষেপই করতে চাইছেন। আরএসএসের এই প্রস্তাব নিয়ে তিনি এখনও মুখ খোলেলনি। কিন্তু তাঁর মন্ত্রক সূত্রের দাবি, ‘‘মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে অনেক প্রস্তাবই আসে। এটিও তার মধ্যে একটি। কিন্তু এর ভিত্তিতে পাঠ্যপুস্তক বদল নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’’