প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।—ফাইল চিত্র।
সামনে লোকসভা নির্বাচন। অথচ রামমন্দির নিয়ে হোলদোল নেই মোদী সরকারের। তাতে অসন্তুষ্ট রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। তাই এ বার অযোধ্যায় মন্দির নির্মাণের সময়সীমা বেঁধে দিল তারা। জানিয়ে দিল, ২০২৫ সালের মধ্যে রামমন্দির নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে।শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলায় গিয়েছিলেন সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক ভাইয়াজি জোশী। সেখানে একটি অনুষ্ঠানে তিনি-ই এমন মন্তব্য করেন। সেই সঙ্গে দাবি করেন, মন্দির নির্মাণ হয়ে গেলে দেশের উন্নয়ন আর ঠেকানো যাবে না।
ভাইয়াজি জোশী বলেন,“হাজার হাজার মন্দির রয়েছে দেশে। তাই এটা শুধুমাত্র মন্দিরের সংখ্যা বাড়ানোর আর্জি নয়। এর সঙ্গে কোটি কোটি মানুষের আবেগ জড়িয়ে।” এই মুহূর্তে অযোধ্যা মামলা আদালতে ঝুলছে। যদিও আদালতের রায়ের অপেক্ষা না করে অর্ডিন্যান্স জারি করতে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছে শিবসেনা এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্দির তৈরি নিয়ে এগোতে চায় না সরকার। সম্প্রতি নিজমুখে সে কথা জানিয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ততদিন পর্যন্ত হাতে হাত রেখে বসে থাকায় সায় নেই জোশীর। তাঁর যুক্তি, “১৯৫২ সালে গুজরাতে সোমনাথ মন্দিরের নির্মাণ হয়। তারপর উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি পায়। ২০২৫-এর মধ্যে রাম জন্মভূমির উপর মন্দির তৈরির কাজও সেরে ফেলতে হবে। তাহলে দেশের উন্নয়নের গতি আরও ত্বরান্বিত হবে। মন্দির নির্মাণ হয়ে গেলে, আগামী দেড়শো বছর আর পুঁজি নিয়ে ভাবতে হবে না।”
রামমন্দির নিয়ে মোদীর মন্তব্যে, এর আগে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল সঙ্ঘও। একটি বিবৃতি জারি করে তারা জানায়, মন্দির নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েই ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেছিল মোদী সরকার। ক্ষমতায় থাকাকালীন তারা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে বলেই আশা মানুষের। তার মধ্যেই হঠাত্ করে মন্দির নির্মাণের কাজ ২০২৫ পর্যন্ত পিছিয়ে নিয়ে যাওয়ায় জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি মোদী সরকারের উপর আর ভরসা নেই সঙ্ঘের? দ্বিতীয়বার ফের ক্ষমতায় এলেও, মোদী-শাহ মন্দির নির্মাণকে আদৌ অগ্রাধিকার দেবেন কি না, তা নিয়ে কি প্রতিষ্ঠানের অন্দরে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে? যার জেরে ২০২৫ পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিতে হচ্ছে? ভাইয়াজি জোশীর অবশ্য জল্পনা খারিজ করেছেন। তাঁর দাবি, “আমি বলতে চেয়েছিলাম, ২০২৫-এর মধ্যে মন্দির নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলতে হবে। এখন কাজ শুরু করলে, হাতে ৫ বছর সময় পাওয়া যাবে। তার মধ্যে সবকিছু মিটে যাওয়া উচিত।”
আরও পড়ুন: ব্রিগেড সমাবেশকে সমর্থন জানিয়ে ‘মমতাদি’কে চিঠি লিখলেন রাহুল
আরও পড়ুন: ডান্স বার বন্ধ করতে অনড় মহারাষ্ট্র সরকার আনছে নয়া অর্ডিন্যান্স
অযোধ্যার ওই বিতর্কিত জমি নিয়ে ২৯ জানুয়ারি থেকে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি শুরু। বিচারপতি ইউইউ ললিতও ওই ডিভিশন বেঞ্চে ছিলেন। কিন্তু ১৯৯৭ সালে এই মামলাতেই উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংহের হয়ে আদালেত সওয়াল করেছিলেন তিনি। যার জেরে নিজেকে সরিয়ে নিতে হয়েছে তাঁকে।