চানুর পথেই অনশনে রোবিতা

এক জনের অনশন ভঙ্গ মেনে নিতে পারছেন না মণিপুরবাসী। অন্য জন অনশন শুরু করলেন— তাতেও আপত্তি সকলের। পরিবার, মহিলা সংগঠন, নাগরিক সংগঠন— সবার আপত্তি উড়িয়ে আজ সকাল থেকে মণিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে নিজের দফতরে অনশন শুরু করলেন ৩২ বছরের মানবাধিকার কর্মী আরাম্বাম ওংবি কোনথৌজাম রোবিতা লেইমা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৬ ০২:৪২
Share:

রোবিতা লেইমা।—নিজস্ব চিত্র

এক জনের অনশন ভঙ্গ মেনে নিতে পারছেন না মণিপুরবাসী। অন্য জন অনশন শুরু করলেন— তাতেও আপত্তি সকলের। পরিবার, মহিলা সংগঠন, নাগরিক সংগঠন— সবার আপত্তি উড়িয়ে আজ সকাল থেকে মণিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে নিজের দফতরে অনশন শুরু করলেন ৩২ বছরের মানবাধিকার কর্মী আরাম্বাম ওংবি কোনথৌজাম রোবিতা লেইমা। দাবি আফস্পা প্রত্যাহারের পাশাপাশি মণিপুরে ভূমিপুত্রদের সুরক্ষায় ইনারলাইন পারমিট চালু করা।

Advertisement

রোবিতাদেবী গত কালই জানিয়েছিলেন, সদ্য অনশন আন্দোলন শেষ করা ইরম শর্মিলা চানুর আশীর্বাদ নিয়ে আজ নিজের অনশন শুরু করবেন। গত রাতে ‘সালাই চানুরা আপুনবা নুপি লুপ’ সংগঠনের সদস্যরা রোবিতাকে তাঁদের দফতরে নিয়ে গিয়ে বিস্তর বোঝান। কিন্তু রোবিতা অনড়।

‘আপুনবা নুপি লুপ’ অনশনে সমর্থন না জানানোয় বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ সেখান থেকে বেরিয়ে দুই সঙ্গিনীকে নিয়ে অটোয় চেপে ইম্ফল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কাঞ্চিপুরে নিজের সংগঠন ‘উইমেন এগেনস্ট ক্রাইম’-এর দফতরে এসে মাদুর পেতে অনশন চালাতে থাকেন রোবিতা। এক ফাঁকে ঘুরে আসেন গোবিন্দজির মন্দির ও কাংলা দূর্গ। কিন্তু পুলিশ ইম্ফল থেকে এত দূরে তাঁকে অনশন চালাতে দেয়নি। বাধ্য হয়ে রোবিতা পরে পূর্ব ইম্ফলের কোংবা নোংথৌম্বাম লেইকাইতে নিজের পাড়ায় ফিরে যান।

Advertisement

বাড়ি যাওয়ার পথে হাসপাতালে গিয়ে শর্মিলার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছিলেন রোবিতা। কিন্তু অনুমতি মেলেনি। নারাজ স্বামীর হাতে আপাতত দুই ছেলে-মেয়ের দায়িত্ব দিয়ে নিজের পাড়াতেই অনশনে বসেছেন তিনি। সঙ্গী বলতে নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হাতেগোনা কয়েক জন সদস্যা। মণিপুরের মানবাধিকার সংগঠনগুলির অধিকাংশই রোবিতার অনশনকে ‘নজর কাড়ার চেষ্টা’ বলে বর্ণনা করছে। রোবিতা অবশ্য তাঁর এই অনশন শর্মিলাকেই উৎসর্গ করছেন।

‘সালাই চানুরা আপুনবা নুপি লুপ’ ও ‘আপুনবা মণিপুর কানবা লুপ’ সংগঠনের নেত্রীরা জানিয়েছেন, রোবিতাকে অনেক বোঝানো হয়েছে। কিন্তু জোর করে তো আর অনশন থামানো যায় না। রোবিতার আন্দোলন কত দিন স্থায়ী হবে তা সময়ই বলবে। পুলিশও রোবিতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আগে তাঁর অনশনের প্রভাব ও সমর্থন যাচাই করে নিতে চাইছে।

এ দিকে, মণিপুর প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি টি এন হাওকিপ জানিয়েছেন, কংগ্রেস বরাবরই আফস্পা প্রত্যাহারের পক্ষে। তিনি জানান, শর্মিলার অনশন শুরু করার ৪ বছরের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহ কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারকে চাপ দিয়ে ইম্ফলের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে আফস্পা উঠিয়ে নিয়েছিলেন। হাওকিপ বলেন, ‘‘শর্মিলার জন্যই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মণিপুরের সমস্যার কথা পৌঁছেছে। কিন্তু মোদী সরকারের মনোভাবে ভরসা হারিয়েই চানু অনশন ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement