নীতীশ কুমার। —ফাইল চিত্র।
তিনি ক্ষমতায় আসার পরে বিহারে মহিলাদের পোশাকের পরিবর্তন হয়েছে বলে ‘প্রগতি যাত্রায়’ বেরিয়ে দিন কয়েক আগে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এ বার পাল্টা সেই মন্তব্য নিয়ে নীতীশকে খোঁচা দিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বললেন, ‘‘আপনি কোনও ফ্যাশন ডিজ়াইনার নন!”
বিহারে বিধানসভা ভোটের আগে সরকার ও দলকে সংগঠিত করতে ‘প্রগতি যাত্রা’ শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। লক্ষ্য, এই যাত্রার মাধ্যমে সরকারের কাজকর্ম তুলে ধরে বিহারে দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানো। এই যাত্রায় বেরিয়ে দিন কয়েক আগে জেডিইউ প্রধান বেগুসরাইয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘মেয়েরা এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী। তাঁরা চমৎকার কথাও বলেন। কত সুন্দর ভাবে পোশাক পরেন। ওঁদের কি আমরা আগে এমন ভাল পোশাক পরতে দেখেছিলাম?”
নীতীশের এই মন্তব্য নিয়েই রাজনৈতিক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের ভিডিয়োটি নিজের এক্স-হ্যান্ডলে শেয়ার করেন আরজেডি প্রধান তেজস্বী যাদব। সেখানে বিহার বিধানসভার বিরোধী নেতা লিখেছেন, ‘আগে বিহারের মেয়েরা কেবল পোশাকই নয়, স্বাভিমান, স্বাবলম্বিতা ও সম্মানও পরিধান করতেন। আপনি মুখ্যমন্ত্রী, মেয়েদের ফ্যাশন ডিজ়াইনার হতে যাবেন না! আপনার বিকৃত চিন্তাভাবনা দেখানোর দরকার নেই। এটা কোনও বিবৃতি নয়, বিহারের জনসংখ্যার অর্ধেককে সরাসরি অপমান করা।’
এ বছরের শেষ ভাগে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার চালাচ্ছেন নীতীশ। কিন্তু বিজেপি যে ভাবে তাঁর প্রশাসন এবং সরকারের উপরে নিয়ন্ত্রণ বাড়াচ্ছে, তাতে বেশ উদ্বেগে জেডিইউ শীর্ষ নেতৃত্ব। বিজেপি যে বিহারে তাঁদের দলের জমি দ্রুত দখল করে নিচ্ছে, সেটা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন নীতীশের দলের নেতারা। কিন্তু এই মুহূর্তে তাঁরা কিছু করতেও পারছেন না। তা ছাড়া বিধানসভা ভোটে বিজেপি যে আসনবণ্টন নিয়ে বিস্তর দরকষাকষি করবে এবং নীতীশের অংশে ভাগ বসাবে, সে ইঙ্গিত আগেই দিয়ে রেখেছে তারা। এরই মধ্যে এ মাসের গোড়ার দিকে লালুপ্রসাদের ‘দরজা খোলা’ রেখে আমন্ত্রণ এবং তা শুনে নীতীশের স্মিত হাসি ঘিরে নানা জল্পনা ঘনিয়েছিল বিহারে। লালু বলেছিলেন, “নীতীশের জন্য ইন্ডিয়া জোটের দরজা খোলা। তাঁরও উচিত নিজের দরজা খুলে দেওয়া। তা হলে দুই প্রান্তের লোক যাতায়াত করতে পারবেন।” লালুর সেই প্রস্তাব শুনে হাসলেও তা প্রকাশ্যে পুরোপুরি উড়িয়ে দেননি নীতীশ। এর ফলে নীতীশের ফের ‘ইন্ডিয়া’ জোটে ফেরার জল্পনা বাড়তে থাকে। তবে এ বার তেজস্বী যে ভাবে নীতীশকে নিশানা করেছেন, তাতে সেই সম্ভাবনা ফের চাপা পড়ে গেল বলেই মনে করা হচ্ছে।