বন্যা কবলিত বিহারের বিস্তীর্ণ এলাকা। ছবি: পিটিআই।
নেপালে টানা বৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিহারে। গত কয়েক দিনে রাজ্যের প্রায় অর্ধাংশ জলের নীচে চলে গিয়েছে। ডুবেছে ২৭০টিরও বেশি গ্রাম। জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৬টি করে দল উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। হেলিকপ্টারে করে শুকনো খাবার এবং ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকায়। গঙ্গা-সহ একাধিক নদীর জল বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বিহারে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, টানা ৭০ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টি হয়েছে নেপালে। সেই বিপুল জল ছাড়া হয়েছে। কোশি এবং গন্ডক নদী ভেসে গিয়েছে নেপালের সেই জলে। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে গঙ্গার জলও। গত ২৪ ঘণ্টায় দ্বারভাঙা এবং সহরসা জেলাতে নতুন করে জল ঢুকতে শুরু করেছে। বিহারের ৩৮টি জেলার মধ্যে ১৯টি জেলা বন্যা কবলিত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১২ লক্ষের বেশি মানুষ, জানিয়েছে প্রশাসন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চম্পারন, কিষাণগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, পূর্ণিয়া, মাধেপুরা, মুফজ্জরপুর, কাটিহারের মতো জেলার বিস্তীর্ণ অংশ। এই এলাকাগুলিতে খাদ্য এবং পানীয় জলের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। চিকিৎসার অভাবে ধুঁকছেন রোগীরা। পরিসংখ্যান বলছে, নেপালের বিরপুর ব্যারাজ থেকে কোশি নদীতে ছাড়া হয়েছে সাড়ে ছ’লক্ষ কিউসেকের বেশি জল। গত ৫৬ বছরে এই পরিমাণ জল কখনও ছাড়া হয়নি নেপাল থেকে।
গঙ্গা, কোশি, গন্ডক ছাড়াও বন্যা দেখা দিয়েছে বাগমতি এবং মহানন্দা নদীতে। জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী জানিয়েছে, প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষকে বন্যা কবলিত এলাকাগুলি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। জলমগ্ন এলাকায় নৌকায় করে পৌঁছচ্ছেন চিকিৎসকেরা। নৌকাই হয়ে উঠেছে অ্যাম্বুল্যান্স।
বন্যায় চাষের প্রভুত ক্ষতি হয়েছে। ডুবে গিয়েছে বিঘার পর বিঘা জমি। প্রচুর সব্জি এবং শস্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত করে এখনই বলা সম্ভব নয়। বন্যার জল নামলে ক্ষতির বিষয়ে হিসাব করা যাবে। মঙ্গলবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আকাশপথে বন্যা কবলিত এলাকাগুলি ঘুরে দেখেছেন। প্রশাসনিক আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। বন্যা মোকাবিলার জন্য ৬৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।