অভিযুক্ত প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মসিহা। —ফাইল চিত্র।
চণ্ডীগড়ের মেয়র ভোট নিয়ে ফের উষ্মাপ্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চের নির্দেশ, মঙ্গলবারই ভোটের কাজে ব্যবহৃত সমস্ত ব্যালট পেপার আদালতে নিয়ে যেতে হবে। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালতে পেশ করতে হবে ভোটগণনার সময়ে তোলা ভিডিয়ো ফুটেজও।
চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ তুলেছিল বিরোধী আপ এবং কংগ্রেস। সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল আপ। গত ৫ ফেব্রুয়ারির শুনানিতে কারচুপিতে অভিযুক্ত প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মসিহাকে সোমবার সশরীরে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আপের তরফে প্রকাশিত একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছিল, বেশ কিছু ব্যালটে কাটাকুটি করছেন তিনি। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় অনিলের উদ্দেশে বলেন, “মাননীয় মসিহা, আপনি যদি সঠিক উত্তর না দেন, তা হলে আপনি শাস্তি পাবেন। এটা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমরা ভিডিয়ো দেখেছি। আপনি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ব্যালট পেপারের উপরে কাটাকুটি করে কী করছিলেন?
অভিযুক্ত প্রিসাইডিং অফিসার জানান, যাতে ব্যালট পেপারগুলি মিশে না যায়, তার জন্যই তিনি দাগ দিয়ে রাখছিলেন। ভিডিয়োয় কেন তাঁকে বার বার সিসি ক্যামেরার দিকে তাকাতে দেখা গিয়েছে, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “অনেক ক্যামেরা ছিল। আমি সেগুলির দিকেই তাকিয়েছিলাম।” তাঁর বক্তব্য শোনার পর শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ব্যালটগুলি পরীক্ষা করে দেখার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত ৩০ জানুয়ারি মেয়র নির্বাচন ছিল চণ্ডীগড়ে। বিজেপিকে রুখতে ওই নির্বাচনে যৌথ ভাবে লড়াইয়ে নেমেছিল কংগ্রেস এবং আপ। পুরপ্রতিনিধিদের ভোটের হিসাবে প্রথমে এগিয়েও গিয়েছিলেন আপ-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী কুলদীপ সিংহ। মোট ৩৬টি বৈধ ভোটের মধ্যে জোট পায় ২০টি। অন্য দিকে, বিজেপির মেয়র পদপ্রার্থী মনোজ সোনকর পান ১৬টি ভোট। কিন্তু পরে জোটপ্রার্থী কুলদীপ সিংহের পাওয়া ৮টি ভোটকে বাতিল ঘোষণা করেন প্রিসাইডিং অফিসার অনিল।
আপ-কংগ্রেস জোটের অভিযোগ, গণনার ঠিক আগে অনিল নিজেই কলম দিয়ে কয়েকটি ব্যালটে ‘দাগ’ দিয়েছিলেন। পরে সেগুলিই বাতিল করেন তিনি। মেয়র নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে ভোট দেন চণ্ডীগড়ের বিজেপি সাংসদ কিরণ খের। বিরোধী প্রার্থীর ৮টি ভোট বাতিল হওয়ায় তাঁর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১২তে। ১৬টি ভোট পেয়ে ৩৫ আসনের চণ্ডীগড় পুরনিগমে জয় পায় বিজেপি। ভোট বাতিলের ঘোষণা হওয়ার পরেই পুরনিগমে হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন আপ এবং কংগ্রেসের পুরপ্রতিনিধিরা।