জলের তোড়ে ভেঙে পড়েছে বাড়ি কেরলে। ছবি: পিটিআই
বেনজির বন্যায় বিপর্যস্ত কেরল। এই দুঃসময়ে কেরলের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ত্রাণ সংগ্রহের তৎপরতা শুরু হল বাংলাতেও। সিপিএমের রাজ্য কমিটি কেরলের বন্যাদুর্গত মানুষের সাহায্যার্থে পথে নামছে। তার পাশাপাশি একাধিক বেসরকারি সংগঠনও দক্ষিণী ওই রাজ্যের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। খাবার, ওষুধপত্র, কাপড়ের মতো সামগ্রী ছাড়াও চেক, ডিমান্ড ড্রাফ্ট বা অনলাইনে আর্থিক সাহায্য করতে পারেন ইচ্ছুক নাগরিকেরা।
কাজের সূত্রে বাংলার বহু মানুষ কেরলে থাকেন। অন্য রাজ্য থেকেও পরিযায়ী শ্রমিকেরা আছেন ওই রাজ্যে। বন্যায় তাঁদের কী অবস্থা, তা নিয়ে চিন্তিত পরিবার-পরিজনেরা। তাঁদের আশ্বস্ত করে কেরল রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, রেলের সহযোগিতায় এর্নাকুলাম স্টেশন থেকে কিছু বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা হয়েছে। এর্নাকুলাম থেকে তিরুঅনন্তপুরম, মাদুরাই হয়ে ট্রেন যাবে চেন্নাই পর্যন্ত। সেখান থেকে হাওড়া বা অন্য কোনও গন্তব্যের ট্রেন ধরতে ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের সুবিধা হবে। প্রথম ট্রেনটি শুক্রবার সন্ধ্যাতেই এর্নাকুলাম ছেড়েছে।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের বক্তব্য, এই মরসুমে প্রবল বর্ষণ ও দুর্যোগে এখনও পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে সব মিলিয়ে ৩২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত নয় দশকে এটাই কেরলে সব চেয়ে ভয়াবহ বন্যা। ওই রাজ্যে অন্তত ৫০ হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং দেড় লক্ষ মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন জানিয়ে সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি ত্রাণ সংগ্রহে নামার ডাক দিয়েছে। দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের বক্তব্য, ‘‘এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে কেরলের বন্যাবিধ্বস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জেলা কমিটিগুলিকে জরুরি ভিত্তিতে গণ অর্থ সংগ্রহের কর্মসূচিতে সামিল হাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে জেলার সুবিধামতো যে কোনও দিন গোটা জেলার সর্বত্র হাট-বাজারে পথসভা করে গণ অর্থ সংগ্রহ করতে হবে।’’ জেলা থেকে সংগৃহীত অর্থ দলের রাজ্য কেন্দ্রের ‘রাজ্য ত্রাণ তহবিল’ মারফত কেরলে পৌঁছে দেওয়া হবে। এসএফআই-ও এ রাজ্যে ২০ থেকে ২৬ অগস্ট ত্রাণ সংগ্রহে নামবে।
সিপিএমের মারফত না-করে কেউ যদি সরাসরি কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর বির্পযয় মোকাবিলা ও ত্রাণ তহবিলে সাহায্য দিতে চান, তাঁদের জন্যও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য দিয়ে সহায়তা পাঠানোর আর্জি জানিয়েছে দলের পলিটব্যুরো।