এক দিকে লাল ফিতের ফাঁস। অন্য দিকে চিনকে নিয়ে মন কষাকষির ফাঁদ। এই দু’টি বিষয়কে এড়িয়ে ভারত-আমেরিকাকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে বলে বার্তা দিলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব চাক হাগেল।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, জ্যাভেলিন-এর মতো আধুনিক প্রযুক্তির ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে ভারতকে সাহায্য করতে চায় আমেরিকা। একমাত্র নয়াদিল্লিকেই এই সহযোগিতা করছে ওয়াশিংটন। কিন্তু হাগেল সাফ জানিয়েছেন, আমলাতন্ত্রের লাল ফিতের ফাঁস যাতে এই সহযোগিতার মাঝে বাধা হয়ে না দাঁড়ায় তা দু’দেশকেই দেখতে হবে। মনমোহন সিংহের জমানায় আমেরিকার সঙ্গে ভারতের বেশ কিছু প্রতিরক্ষা চুক্তি দীর্ঘদিন আটকে ছিল। নরেন্দ্র মোদীর জমানায় তার পুনরাবৃত্তি চায় না আমেরিকা। এশিয়ায় চিনকে লাগাম পরিয়ে রাখতে ভারত ও জাপানের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক মজবুত করতে চায় আমেরিকা। আজও হাগেল আমেরিকা, ভারত ও জাপানের মধ্যে সামরিক সমঝোতা আরও বাড়ানোর কথা বলেছেন। কিন্তু আমেরিকার জন্য ভারত চিনের সঙ্গে সম্পর্ক পুরোপুরি খারাপ করতে চায় না। সেই অবস্থানকে কার্যত মেনেই নিয়েছেন হাগেল। তাঁর কথায়, “চিনের সঙ্গে যোগাযোগ নিয়ে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ করলে চলবে না। শত্রুতার ফাঁদ এড়িয়ে চলতে হবে।”
সেপ্টেম্বরে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে বৈঠক করার কথা তাঁর। মোদীকে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন হাগেল। হাগেলের সঙ্গে বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অরুণ জেটলি মার্কিন অস্ত্র কেনার চেয়ে যৌথ উদ্যোগে অস্ত্র তৈরির উপরেই জোর দিয়েছেন। মার্কিন প্রযুক্তি ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে আমেরিকার যে শর্ত রয়েছে, সেগুলি বড় বাধা। প্রযুক্তি দেওয়ার বদলে আমেরিকাকে কোনও নজরদারি চালানোর সুযোগ দিতে রাজি নয় ভারত। হাগেল বলেন, “আমরা ভারতকে যৌথ উদ্যোগে এক ডজন অস্ত্র ও সরঞ্জাম তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে। এ জন্য ডিটিটিআই (ডিফেন্স ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজি ইনিশিয়েটিভ) নামের একটি মঞ্চও তৈরি হয়েছে।” এই বিষয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের কর্তা ফ্র্যাঙ্ক কেন্ডলকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কেন্ডল চলতি বছরের শেষে ভারত সফরে আসবেন।