কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। -ফাইল চিত্র।
ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা ও গোপনীয়তার প্রশ্নে ভারসাম্যের নীতি নেওয়ার ডাক দিলেন কেন্দ্রীয় আইন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। তাঁর যু্ক্তি, বিপদ এড়াতে দরজা পুরো বন্ধ করে রাখলে নতুন উদ্ভাবনের রাস্তাই রুদ্ধ হয়ে যাবে। উল্টে বিপদ ঠেকানোও কঠিন হবে। তাঁর মতে, ব্যক্তিগত বা স্পর্শকাতর তথ্যের সুরক্ষার বিষয়ে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। কিন্তু ব্যক্তিগত তথ্য কাউকেই যদি ব্যবহার করতে না দিলে অনেক গবেষণাই আটকে যাবে। এবং সেই গবেষণার ফল থেকে সমাজ বঞ্চিত হবে।
দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে রবিশঙ্কর গত কাল আরও একটি বিষয়ে সতর্ক করেন। তা হল, ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখার অধিকারকে নিরঙ্কুশকরে তুললে, এটাকে ঢাল করে দুষ্কৃতী, দুর্নীতিবাজ ও জঙ্গিরা অবাধে অপরাধ ও নাশকতা চালিয়ে যেতে পারে। গুজব ছড়ানোয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসা হানাহানি খুনের প্রচুর ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি। কিন্তু কারা এর উৎস তা জানতে প্রশাসনকে বেগ পেতে হয়েছে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার শর্তের কারণে। ওই তথ্য পাওয়ার জন্য রবিশঙ্কর কখনও নোটিস পাঠিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়াকে, বৈঠকও করেছেন একাধিক বার। কিন্তু পুরো সাফল্য আসেনি।
পাশাপাশি, গবেষণা ও উদ্ভাবনের রাস্তা বন্ধ না-করার পক্ষেও সওয়াল করেন রবিশঙ্কর। আধারের তথ্য বেসরকারি হাতে যাওয়ার বিরুদ্ধে আপত্তি ওঠায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, মোবাইল ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আধার সংযোগ বাধ্যতামূলক নয়। এ প্রসঙ্গে রবিশঙ্করের মন্তব্য, ‘‘ভারতে আর্থিক ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। সেপ্টেম্বর মাসে ভীম অ্যাপের মাধ্যমে ৫৭ হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। মানুষের তথ্য ছাড়া দেশে উদ্ভাবনী শক্তির এই প্রসার সম্ভবই হত না।’’
এ ক্ষেত্রে ভারতে একটি ভরসার দিকও আছে বলে ওই অনুষ্ঠানে আশ্বস্ত করেন নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘উদ্ভাবনের প্রসার চাইলে একান্ত স্পর্শকাতর নয়,মানুষের এমন ব্যক্তিগত তথ্যের বড় অংশ ব্যবহার করা প্রয়োজন। ভরসার দিক হল, আমেরিকা বা চিনে মানুষের তথ্য রয়েছে দু’একটি বড় বেসরকারি সংস্থার হাতে। ভারতে তা আছে আধার, জিএসটি বা আয়ুষ্মান ভারতের মতো সরকারি কর্তৃপক্ষের হাতে।’’ অমিতাভ তাই মনে করেন, ওই তথ্য নিয়ে শিল্পমহল, শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পক্ষকে গবেষণা করতে দিতে হবে। দেশে উদ্ভাবনের প্রসার ও ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় কাজকর্ম বাড়ানো সম্ভব এই পথেই।