লালকেল্লা। ইনসেটে দেবী বগলামুখী
নরেন্দ্র মোদীকে ফের ক্ষমতায় আনতে এ বারে মহাযজ্ঞের আয়োজন করছে বিজেপি। তা-ও যেখানে-সেখানে নয়, খোদ লালকেল্লায়।
বিজেপি সূত্রের খবর, দলের সাংসদ মহেশ গিরির উদ্যোগে এই ‘রাষ্ট্র রক্ষা যজ্ঞ’ আয়োজনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত। বাকি শুধু দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ছাড়পত্র। পরিকল্পনা মতো সব এগোলে, আগামী মার্চ মাসে টানা এক সপ্তাহ ধরে ১০৮টি কুণ্ডে মহাযজ্ঞ হবে। সেখানে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ও দলের অন্যান্য নেতা-সহ প্রায় কুড়ি হাজার জনকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এই আয়োজনের লক্ষ্যই হল, ২০১৯-এও ফের মোদীকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা। তার জন্য মহা ধুমধামে দেবী বগলামুখীর আরাধনা হবে।
কেন বগলামুখী? বিজেপির এক নেতার ব্যাখ্যা, হিন্দু মতে দশ মহাবিদ্যার অন্যতম দেবী বগলামুখী। পীতাম্বরা এই দেবীমূর্তির ডান হাতে শত্রু প্রহারের গদা, বাঁ হাতে তিনি শত্রুর জিভটি টেনে ধরে থাকেন। শত্রুকে তিনি যাতে (স্তম্ভন) স্তম্ভিত ও শক্তিহীন করে দেন, সেই বর লাভের জন্য ভক্তেরা তাঁর পূজা করেন। বিজেপি নেতাটির কথায়, ‘‘দেবী বগলামুখীকে ব্রহ্মাণ্ডের সব শক্তি মিলে মোকাবিলা করতে পারেনি। তাঁর আরাধনা করলে কোনও শক্তিই পরাস্ত করতে পারবে না।’’
আরও পড়ুন: সংস্কার করলেও নালিশ! অভিমানী মোদী
আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি অবশ্য এখনই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু বলতে চাইছে না। কারণ, এখনও শীর্ষ নেতৃত্বের ছাড়পত্র পাওয়া যায়নি। লালকেল্লায় এমন আয়োজন নিয়ে আপাতত জল মাপতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির বিতর্কিত বিধায়ক সঙ্গীত সোম যখন মোঘল শাসকের তৈরি তাজমহল গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন, সেই সময়েই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছিলেন তা হলে কী লালকেল্লা থেকে বক্তৃতা দেওয়াও বন্ধ করবেন প্রধানমন্ত্রী? কারণ, সেটিও তো মোঘল শাসকেরই তৈরি। বিজেপি বলছে, ‘‘লালকেল্লায় যজ্ঞ করলে তার শুদ্ধকরণ হয়ে যাবে।’’
বিজেপির এই আয়োজন সম্পর্কে জেনে কংগ্রেস বলছে, ভোট যত এগিয়ে আসবে, তত বেশি করে এই ধরনের হিন্দুত্বেরই তাস খেলার চেষ্টা করে যাবে মোদীর দল। কর্নাটকে ভোটের এখনও ক’মাস দেরি আছে। এখন থেকেই অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথ সে রাজ্যে হিন্দুত্বকে উস্কে দিতে শুরু করেছেন। ফলে লোকসভার আগে যে বিজেপি ও তার সঙ্গীরা হিন্দুত্বকে চরম মাত্রায় নিয়ে যাবে, সেটি অপ্রত্যাশিত নয়।