বিদায়লগ্নেও ধর্ষকদের প্রতি ক্ষমাহীন প্রণব

বিপুল সংখ্যক মামলা ঝুলে থাকার সমস্যায় ভুগছে দেশ। মামলার ফয়সালা হয়ে যাওয়ার পরেও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ হতে অনেকটা সময় লেগে যায়। অতীতে দেখা গিয়েছে, রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো প্রাণভিক্ষার আর্জি ঝুলে থাকে দীর্ঘদিন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭ ০৩:৪৭
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় আরও দু’টি প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করেছেন গত সপ্তাহে। দেশের সাংবিধানিক শীর্ষ পদে তাঁর পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ জুলাই। এ পর্যন্ত তাঁর কাছে আসা মোট ৩০টি প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করেছেন তিনি।

Advertisement

বিপুল সংখ্যক মামলা ঝুলে থাকার সমস্যায় ভুগছে দেশ। মামলার ফয়সালা হয়ে যাওয়ার পরেও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ হতে অনেকটা সময় লেগে যায়। অতীতে দেখা গিয়েছে, রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো প্রাণভিক্ষার আর্জি ঝুলে থাকে দীর্ঘদিন। কারণ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে পাঠানো আর্জি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া নেই। ফলে এক জনের মেয়াদ ফুরোলে বকেয়া আর্জির দায় বর্তায় পরবর্তী রাষ্ট্রপতির উপরে। প্রণববাবু এই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী। রাইসিনা হিলসে পা রাখার পর থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে নজর কাড়া বেশ ক’টি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় ফাঁসি রদের আর্জি খারিজ করেছেন তিনি। ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে ২৬/১১-য় হামলা চালানো পাক জঙ্গিদের অন্যতম আজমল কসাব, ২০০১-এ সংসদ হামলার চক্রী আফজল গুরু, চন্দনদস্যু বীরাপ্পনের সঙ্গী সাইমন, জ্ঞানপ্রকাশ, মাদাইয়া ও বিলাবন্দ্রন এদের অন্যতম। কসাবের ফাঁসি হয়েছে ২০১২ সালে। আফজল গুরুকে ফাঁসি দেওয়া হয় পরের বছর। সর্বশেষ যে দু’টি আর্জি প্রণববাবু খারিজ করলেন, তার দু’টিই ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনা।

পুণেতে ২০০৭ সালে পুরুষোত্তম দশরথ নামে এক ট্যাক্সিচালক ও তার সঙ্গী প্রদীপ যশোবন্ত কোকাড়ে ২২ বছর বয়সি এক মহিলাকে ধর্ষণ ও খুন করে। ওই মহিলা রাতের শিফটে কাজ করতে অফিসে যাচ্ছিলেন। নিম্ন আদালত দু’জনকেই চরমদণ্ড দিলে প্রথমে বম্বে হাইকোর্ট ও পরে ২০১৫ সালের ৮ মে-র রায়ে সুপ্রিম কোর্ট তা বহাল রাখে।

Advertisement

আরও পড়ুন: নাগা সন্ন্যাসীদের আখড়া নিয়ে নিষেধাজ্ঞা কামাখ্যায়

ইনদওরে ২০১২ সালে ৪ বছর বয়সি একটি শিশুকে তিন জনে মিলে ধর্ষণ ও খুন করেছিল। প্রথমে শিশুটিকে তার এক আত্মীয়ের বাড়ির সামনে থেকে অপহরণ করে জীতেন্দ্র, বাবু ও সানি। এর পরে ধর্ষণ করে মেয়েটিকে গলা টিপে খুন করে তারা। দেহটি ফেলে দেয় নর্দমায়। এক বছরের মাথায় ইনদওরের আদালত তিন জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়। ২০১৪ সালে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট ও পরে ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারির রায়ে সুপ্রিম কোর্ট তা বহাল রাখে।

এই দু’টি ক্ষেত্রেই প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করেছেন রাষ্ট্রপতি। গত জানুযারি মাসের একটি হিসেবে দেখা যাচ্ছে, সে সময় পর্যন্ত তাঁর কাছে এসেছিল ৩২টি আর্জি। তার ২৮টিই খারিজ করেছেন তিনি। খারিজের তালিকায় আরও দুই যোগ হলো এ বারে। দেশের ইতিহাসে যা এক রেকর্ড। রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রণব মুখোপাধ্যায় সন্ত্রাসবাদী ও ধর্ষকদের প্রতি ক্ষমাহীন থেকেছেন বরাবর। বিদায়লগ্নেও তার প্রমাণ দিলেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement