Ranjan Gogoi

ভূমিপূজায় গগৈকে চান অধীর, কটাক্ষ?

অধীরের এই যুক্তি কতখানি গগৈর পক্ষে, নাকি আসলে তা গগৈর প্রতি কটাক্ষ, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২০ ০৫:৩৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকেও অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমি পূজায় আমন্ত্রণ জানানো হোক বলে ‘দাবি’ তুললেন অধীর চৌধুরী। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতার যুক্তি, গগৈ রামমন্দির মামলার রায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তাঁকে ৫ অগস্টের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে ডাকা না-হলে ‘ঘোর অবিচার’ হবে।

Advertisement

অধীরের এই যুক্তি কতখানি গগৈর পক্ষে, নাকি আসলে তা গগৈর প্রতি কটাক্ষ, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এখন রাজ্যসভার মনোনীত সাংসদ। তাঁর নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ রামমন্দিরের মামলার নিয়মিত শুনানির পরে হিন্দুদের পক্ষেই রায় দেয়। সেই রায় নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছিল, তেমনই অবসরের পরেই গগৈকে রাজ্যসভায় মনোনীত করা নিয়েও কম সমালোচনা হয়নি।

শীর্ষ আদালতে এক বার অযোধ্যার বিতর্কিত স্থলের জমির মালিকানা নিয়ে টানাপড়েনের ফয়সালা হয়ে যাওয়ার পরে ভবিষ্যতে এ নিয়ে আর বিতর্ক চাইছে না শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট। তাই মন্দির নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ওই অছি পরিষদ যাবতীয় তথ্য এবং ইতিহাস অযোধ্যায় মন্দিরের মাটির নীচে পুঁতে রাখতে চায়। পরিষদের সদস্য কমলেশ্বর চৌপলের দাবি, সময় ধরে তার বিস্তারিত বিবরণ তাম্রপত্রে লিখে মন্দিরের দু’হাজার ফুট নীচে রেখে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

Advertisement

সম্প্রতি নেপালের প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, রামের আসল জন্মভূমি তাঁর দেশে। বীরগঞ্জের কাছে। সেটিই নাকি আসল অযোধ্যা। আবার বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের এক সংগঠনের দাবি, অযোধ্যা আগে পরিচিত ছিল সাকেত হিসেবে। যা ছিল বৌদ্ধ ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এ ছাড়া, দীর্ঘ দিন বাবরি মসজিদের বিষয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াই তো ছিলই। অনেকে মনে করছেন, ভবিষ্যতে এই ধরনের বিতর্ক এড়াতেই সময়-বিবরণী তৈরির ওই পরিকল্পনা। তবে বাবরি মসজিদের বিষয়ে আইনি লড়াই যতই থাকুক, স্থানীয় সাধু-সন্তদের একাংশের দাবি, শিলান্যাস অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসবেন মুসলিম ভক্তরাও। এমনকি মন্দিরের জন্য নাকি নিজেদের জায়গা থেকে ইটও আনবেন তাঁরা।

কোভিড অতিমারির মধ্যে কেন মোদী সরকার রামমন্দিরকে প্রাধান্য দিচ্ছে, তা নিয়ে এনসিপি সভাপতি শরদ পওয়ার আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এখন সংক্রমণ এড়াতে ই-শিলান্যাসের দাবি তুলেছেন। সিপিআই সাংসদ বিনয় বিশ্বম আজ কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরকে চিঠি লিখে প্রশ্ন তুলেছেন, দূরদর্শনে কেন শিলান্যাস অনুষ্ঠানের সম্প্রচার হবে! তাঁর যুক্তি, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে সরকারের কোনও ধর্মের দিকে ঝোঁকা উচিত নয়। সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম হিসেবে তাই দূরদর্শনে অযোধ্যায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সম্প্রচার এড়িয়ে যাওয়া উচিত। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “সরকার নিজের অগ্রাধিকার ঠিক করবে। কিন্তু এর মাধ্যমে যেন বিজেপি-আরএসএসের আসল উদ্দেশ্য, ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা না-হয়। একই সঙ্গে করোনা সংক্রমণ বেড়ে না-যায়, তা-ও দেখা দরকার।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement