এক দিকে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন, কখনও বলছেন ‘ফাঁসানো’ হয়েছে, কখনও জানাচ্ছেন বিচারব্যবস্থার প্রতি অগাধ আস্থার কথাও। কখনও ছাড়তে চাইছেন না আদালত কক্ষ, কখনও আবার হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছেন। ২০ বছরের সাজা ঘোষণার পর এমনই নানান অবতারে দেখা গেল বাবা গুরমিত রাম রহিমকে। শুধু তাই নয়, জেলে পালিতকন্যা হানিপ্রীতের সঙ্গে থাকতে চান বলে ‘আজব’ আবদারও করলেন বাবা রাম রহিম।
সোমবার দুপুর ৩টে ১৫ মিনিটে রোহতক জেলের ভিতরে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে দু’টি ধর্ষণ মামলায় মোট ২০ বছরের সাজা শোনানো হয়েছে বাবা গুরমিতকে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর রাম রহিমকে গ্রেফতার করে রোহতকে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত সব সময়ই বাবার ছায়াসঙ্গী হিসাবে হানিকে তাঁর পাশেই দেখা গিয়েছিল। সাজা ঘোষণা হওয়ার পর সেই পালিতকন্যার সঙ্গেই জেলে থাকতে চাইলেন রাম রহিম। মেয়ে হানিও বাবার সঙ্গেই রাত কাটাতে চেয়ে আবেদন করেন বিচারকদের কাছে। তবে আদালত জানায়, ধর্ষণ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এক আসামীর সঙ্গে একই সেলে কোনও সঙ্গী থাকতে পারেন কিনা সে সিদ্ধান্ত বিচারকরা নিতে পারেন না। সরকার বা জেল কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেবে।
আরও পড়ুন: ‘বাবা’র পালিত কন্যা হানিপ্রীত কি ডেরা-র নতুন দাবিদার? জল্পনা তুঙ্গে
বাবার আশীর্বাদধন্যা হানি
পরে জেলের তরফে জানানো হয়, পুরুষদের সেলে কোনও মহিলা এভাবে থাকতে পারেন না। জেল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত শোনার পর যারপরনাই ক্ষিপ্ত হয়ে যান গুরমিত। হানিকে তাঁর সঙ্গে থাকতে দেওয়া না হলে জেল আধিকারিকদের বহিষ্কার করে দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি।
বাবা রাম রহিম দোষী সব্যস্ত হওয়ার পর থেকেই ডেরা-র পরবর্তী দাবিদার কে, তা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। তখন থেকেই জোরালো ভাবে উঠে আসছিল হানিপ্রীত ইনসানের নাম। ডেরা সচ্চা সৌদা-র প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংহের তিন মেয়ের মধ্যে অন্যতম তিনি। হানিপ্রীতের আসল নাম প্রিয়ঙ্কা তানেজা।
আরও পড়ুন: ‘বাবা’র মতোই বর্ণময় চরিত্র, কে এই হানিপ্রীত
হিসারের ফতেহবাদের এক সাধারণ ঘরের মেয়ে প্রিয়ঙ্কা। ১৯৯৯-এ সিরসার এক ডেরা ভক্ত বিশ্বাস গুপ্তের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। সেই সময় থেকেই রাম রহিমের সঙ্গে পরিচয় এবং ঘনিষ্ঠতা। প্রিয়ঙ্কা থেকে তিনি পরিচিত হন হানিপ্রীত নামে। রাম রহিম-ই প্রিয়ঙ্কাকে ওই নাম দেন। ডেরা অনুগামীরা দাবি করেন, ‘বাবা’র কাছে শ্বশুরবাড়ির পণ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন হানিপ্রীত। তার পরই নাকি ২০০৯-এ হানিকে দত্তক নেন রাম রহিম। তখন থেকেই বাবা-র ছায়াসঙ্গী হানি।