খবরটা ৪৮ ঘণ্টা আগেও ছিল না তাঁর কাছে। এমনকী, পুরোপুরি ২৪ ঘণ্টা আগেও নয়। রবিবার রাখিবন্ধন। ঠিক আগের দিন তাঁর ডাক পড়ল। অবিলম্বে দিল্লিতে আসুন, দেশের প্রধানমন্ত্রীকে রাখি পরাতে হবে— বার্তা অনেকটা এই রকমই ছিল। বঙ্গ বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী তাই শনিবার তড়িঘড়ি দিল্লির উড়ান ধরলেন। আর রবিবার সকাল হতেই বিজয়া রহাটকরের সঙ্গে পৌঁছে গেলেন লুটিয়েন’স দিল্লির লোককল্যাণ মার্গের ভিভিআইপি বাংলোটায়। তার পরে যা হল, সে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে গিয়ে আপ্লুত হয়ে পড়ছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়।
রবিবার সকালে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে রাখি বাঁধার ভার বর্তেছিল বাংলার বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের উপরে। বিজেপির মহিলা মোর্চা প্রতি বছরই প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাতে রাখি বাঁধে। সেই অনুষ্ঠানে মহিলা মোর্চার সর্বভারতীয় সভানেত্রী থাকেন। তাঁর সঙ্গে থাকেন সর্বভারতীয় স্তরের আরও কয়েকজন নেত্রী অথবা কোনও কোনও রাজ্যের নেত্রীরা। মহিলা মোর্চার সর্বভারতীয় সভানেত্রী বিজয়া রহাটকর এ বার ডেকে নিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। ওডিশা, ছত্তীসগঢ়, কর্নাটক এবং উত্তরপ্রদেশ মহিলা মোর্চার সভানেত্রীরাও ডাক পেয়েছিলেন।
সকাল ৯টায় রাখি বাঁধার অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। বিজয়া, লকেটরা ৭ নম্বর লোককল্যাণ মার্গে অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী বাসভবনে পৌঁছে যান সকাল সাড়ে ৮টায়। শিশুরাও আমন্ত্রিত ছিল অনুষ্ঠানে। প্রধানমন্ত্রী ৯টাতেই পৌঁছন হলে। প্রথমে শিশুরা রাখি বাঁধে। সব শেষে মহিলা মোর্চা রাখি পরিয়ে দেয় প্রধানমন্ত্রীকে। লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘এত ঘরোয়া পরিবেশে মোদীজিকে পাব, ভাবতেই পারিনি আগে। আমার-আপনার ঘরে যে ভাবে রাখিবন্ধন হয়, সে ভাবেই প্রধানমন্ত্রীর হাতে রাখি বাঁধলাম। খাওয়া-দাওয়া করলাম, কথোপকথন হল। আমার জন্য এটা খুব বড় একটা পাওনা।’’
আরও পড়ুন: বিক্রি হয়ে যাচ্ছে রাজ কপূরের স্বপ্নের সেই আর কে স্টুডিও
শুধুমাত্র এই রাখি বন্ধনের জন্যই দিল্লি গিয়েছিলেন। তাই রবিবার রাতেই কলকাতা ফিরে আসছেন পশ্চিমবঙ্গ মহিলা মোর্চার সভানেত্রী। তার আগে দিল্লি থেকে ফোনেই জানালেন, নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কী কথোপকথন হয়েছে তাঁর। ‘‘কেমন আছি আমরা সবাই, বাংলায় সব কাজকর্ম কেমন চলছে, জিজ্ঞাসা করলেন মোদীজি। আমার সবচেয়ে ভাল লাগল যে, আলাদা করে আলাপ করিয়ে দিতে হল না। তিনি নিজেই চিনে নিলেন।’’ বাংলায় বিজেপির সাংগঠনিক কার্যকলাপের খোঁজ নিয়েই শুধু থামেননি মোদী। নিজের উপলব্ধিও ব্যক্ত করেছেন সংক্ষেপে। ‘‘বাংলায় তো পরিস্থিতি ভালই, এ কথাও বললেন মোদীজি।’’ সংক্ষিপ্ত আলাপচারিতায় এ কথাও বলেছেন মোদী, জানালেন লকেট।
আরও পড়ুন: রাখির দিন কী করছেন রাখি?
রাখিবন্ধনের পরে ছিল ফোটো সেশন। ছিল স্ন্যাক্সের আয়োজন। অনুষ্ঠান শেষে বিজয়া রহাটকর-লকেট চট্টোপাধ্যায়দের সঙ্গে রাখি বন্ধন উদ্যাপনের ছবি টুইট করেন মোদী। সে ছবি আবার রিটুইট করেন লকেটরা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে এ দিন নরেন্দ্রী মোদী টুইটারে ‘ফলো’ও করেছেন। লকেট নিজে অনেক আগে থেকেই টুইটারে মোদীর ফলোয়ার ছিলেন। রাখি বন্ধনের পরে ‘দাদা’ও হয়ে উঠলেন ‘বোন’-এর ‘ফলোয়ার’।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)