রাজৌরির জঙ্গি হামলার পরে কাশ্মীরে আরও সেনা পাঠাচ্ছে কেন্দ্র। ফাইল চিত্র।
জম্মুর রাজৌরি সেক্টরে জঙ্গি হামলায় ৬ জনের মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসল দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সন্ত্রাসদমন অভিযানে গতি আনতে পুঞ্চ এবং রাজৌরি সেক্টরে ১,৮০০ জনের একটি সিআরপিএফের দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল সরকার। ইতিমধ্যেই ৯ কোম্পানি সেনা এই দুই সেক্টরে পৌঁছে গিয়েছে। বুধবার রাতের মধ্যে আরও সেনা পৌঁছবে।
সংশ্লিষ্ট মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, সিআরপিএফের এই দলটি পীরপাঞ্জাল রেঞ্জের দক্ষিণে সন্ত্রাসবাদ দমনে বিশেষ অভিযানে নামবে। সোমবার সকালে জম্মুর রাজৌরি এলাকায় একটি বাড়ি লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায় জঙ্গিরা। বিস্ফোরণের ফলে এক শিশু-সহ ৫ জন নিহত হন। নিহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, রবিবার সন্ধ্যায় রাজৌরির যে এলাকায় জঙ্গিরা হামলা করেছিল, ওই একই এলাকায় আবার সোমবার আক্রমণ করে তারা। রবিবার এলোপাথাড়ি গুলি চালালেও সোমবার সকালে সেখানে বিস্ফোরণ হয়।
জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা টুইট করে লেখেন, ‘‘বিস্ফোরণের ঘটনায় যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে দশ লক্ষ টাকা এবং পরিবারের এক সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। যে সব পরিবারের সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন, তাঁদের সরকারের তরফে ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।’’
প্রসঙ্গত, রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ জম্মুর রাজৌরি এলাকা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে ধাংড়ি গ্রামে জঙ্গিরা হামলা করে। তাঁদের গুলিবর্ষণের ফলে ৪ জন মারা যান। গুরুতর আহত হন ৯ জন। স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার একটি এসইউভি গাড়ি করে জঙ্গিরা ধাংড়ি গ্রামে আক্রমণ করে। গাড়ি থেকে নেমে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় তারা। তার পর স্থানীয়রা আহতদের রাজৌরির সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে পৌঁছনোর পর ৩ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। সে দিন রাতেই আরও এক জন মারা যান। রাজৌরি সেক্টরে একের পর এক সন্ত্রাসবাদী হামলা নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। জম্মু ও কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার পরেও সন্ত্রাসবাদে কেন লাগাম পরানো গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। উপত্যকা ছাড়িয়ে জম্মুও কী ভাবে জঙ্গিদের ‘মুক্তাঞ্চল’ হয়ে উঠছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এই পরিস্থিতিতেই দুই সেক্টরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিল সরকার।