কাশ্মীর থেকে সুকমা, সুরক্ষা বৈঠকে রাজনাথ

সুকমার মাওবাদী হামলা মোকাবিলায় ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে জঙ্গলে যুদ্ধে পারদর্শী আধা সেনাদের ছত্তীসগঢ়-ওড়িশার মতো মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ মে ২০১৭ ০২:৫৪
Share:

প্রতিবাদ: কলেজ পড়ুয়াদের উপর পুলিশি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রাস্তায় ওমেন্স কলেজের ছাত্রীরা। সোমবার শ্রীনগরে। ছবি: পিটিআই।

সুকমার মাওবাদী হামলা মোকাবিলায় ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে জঙ্গলে যুদ্ধে পারদর্শী আধা সেনাদের ছত্তীসগঢ়-ওড়িশার মতো মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

Advertisement

গত সপ্তাহে সুকমার কাছে মাওবাদী হামলায় ২৫ জন সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যুর পরে আজ দিল্লিতে দেশের সার্বিক সুরক্ষা-ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বৈঠক ডাকেন রাজনাথ সিংহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব মহর্ষি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গোয়েন্দাপ্রধানরা। সূত্রের খবর, বৈঠকে মাওবাদী মোকাবিলার বিষয়টি ছাড়াও কাশ্মীরের অশান্ত পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়।

গত সপ্তাহে ওই হামলার তদন্তকারীরা মূলত দু’টি বিষয়ের উপরে জোর দিয়েছেন। প্রথমত, ওই এলাকায় মোতায়েন হওয়া অনেক জওয়ানের জঙ্গল যুদ্ধে লড়ার কোনও দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ নেই। সেই কারণে বারংবার মাওবাদীদের হাতে মার খেতে হচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনীকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘জওয়ানদের ছত্তীসগঢ়ে মোতায়েন করার পরে জঙ্গল যুদ্ধে লড়ার একটি প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।’’ কিন্তু মাওবাদীদের মতো সঙ্ঘবদ্ধ প্রশিক্ষিত দলের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য তা যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আগামী দিনে আধা সেনাদের তাই দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে জঙ্গলে গেরিলা লড়াইয়ের প্রশিক্ষণ দিয়ে তবেই উপদ্রুত এলাকাগুলিতে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রক।

Advertisement

সুকমার ঘটনায় দেখা গিয়েছে, জওয়ানরা কোথায় বসে দুপুরের খাবার খাবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য ছিল মাওবাদীদের হাতে। ফলে তারা সেই জায়গার আশেপাশের জঙ্গলে ওত পেতে বসেছিল। কারণ বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, সড়ক কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে যাওয়া দলটি বরাবরই একই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেছে। এবং একই স্থানে বসে বিশ্রাম করছে। যা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোটোকল (এসওপি)র বিরুদ্ধে। এসওপি বলে, এক রাস্তা পরপর দু’দিন কেবলই নয়, সকালে যে রাস্তা দিয়ে বাহিনী গিয়েছে, বিকেলে ফেরার পথে অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরতে। সেটা যে এখানে মানা হয়নি, তা স্পষ্ট। তাই আগামী দিনে জঙ্গলে চলার যে এসওপি রয়েছে তা অক্ষরে অক্ষরে পালনের নির্দেশ দিয়েছেন রাজনাথ।

মাওবাদী সমস্যার পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতিও বিশেষ ভাবে উদ্বেগে রেখেছে কেন্দ্রকে। গরম পড়তেই গত বারের মতো অশান্ত হয়ে উঠেছে উপত্যকা। শুরু হয়েছে চোরাগোপ্তা জঙ্গি আক্রমণও। কিন্তু যে ভাবে সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ পথে নেমে আসছে, তা কী ভাবে রোখা যায় সেটাই এখন কেন্দ্রের কাছে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। স্বরাষ্ট্রকর্তারা স্বীকার করেছেন, বিক্ষোভে সাধারণ মানুষের মৃত্যু বা আহত হওয়া পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই অবস্থায় বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে ছররা গুলির পরিবর্তে লঙ্কাগুঁড়ো ভর্তি পাভা শেল আরও বেশি করে ব্যবহার করার সুপারিশ করেছে কেন্দ্র। এ ছাড়া কাঁদানে গ্যালের স্মোক শেল ব্যবহারের কথাও বলেছে। যা বর্তমানের কাঁদানে গ্যাসের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। ছররা গুলির বদলে ব্যবহার করা হবে প্লাস্টিক বুলেট। এগুলির কোনওটির কারণে প্রাণহানির আশঙ্কা নেই বলে দাবি করেছে কেন্দ্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement