ধর্ষণ রুখলেন রজনীর ভক্ত

ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্টের প্রথম লাইন— ‘‘আমার শরীরে অনেক ক্ষত, কিন্তু আমি এর জন্য গর্বিত।’’ সঙ্গে পোস্টকর্তার গলায় চাপ চাপ রক্তের ছবি। পোস্টকর্তা, ক্রোমপেটের বাসিন্দা ফ্যাশন ফোটোগ্রাফার বসন্ত পল। গর্বের কারণ?

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চেন্নাই শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৬ ০৩:০৯
Share:

বসন্ত পল

ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্টের প্রথম লাইন— ‘‘আমার শরীরে অনেক ক্ষত, কিন্তু আমি এর জন্য গর্বিত।’’ সঙ্গে পোস্টকর্তার গলায় চাপ চাপ রক্তের ছবি। পোস্টকর্তা, ক্রোমপেটের বাসিন্দা ফ্যাশন ফোটোগ্রাফার বসন্ত পল। গর্বের কারণ? ধর্ষণের হাত থেকে এক তরুণীকে প্রায় একাই বাঁচিয়েছেন রজনীকান্তের ওই ফ্যান।

Advertisement

শুক্রবার মধ্যরাতের ঘটনা। মেয়েটির বিশেষ অনুরোধে এখনও পর্যন্ত পুলিশে অভিযোগ করা হয়নি। তবে কাল রাতে ঠিক কী ঘটেছিল তা সবিস্তার নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন বসন্ত।

রজনীকান্ত অভিনীত ‘কাবালির’ প্রথম দিন প্রথম শো দেখে ফিরছিলেন তিনি। পথে কয়েক জন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে দেখা। তার পর আলান্দুরের কাছে একটি শর্টকার্ট রাস্তা নেন তিনি। রাতের বেলা মেরামতির জন্য রাস্তা বন্ধ থাকায়, শর্টকার্ট নেওয়া ছাড়া তাঁর উপায় ছিল না। একটু হাল্কা হওয়ার জন্য রাস্তার এক ধারে দাঁড়িয়েছিলেন বসন্ত। তার পর ধরালেন একটা সিগারেট। মিনিট কয়েক পরেই বসন্তের ঠিক পিছনের ফাঁকা জমি থেকে আওয়াজ, বাঁচার চেষ্টার আর্তি আর কিছুটা গোঙানি মিশিয়ে যেমন শোনায় ঠিক তেমন। বসন্তের প্রথমে মনে হয়েছিল কোনও কুকুর-বিড়ালের আওয়াজ। আর একটু হেঁটে যেতেই ভেসে এল, ‘‘বাঁচাও আন্না, আন্না’’, বলে কান্না। চেঁচিয়ে লোক জড়ো করার চেষ্টা করেন বসন্ত। কিছু বুঝে ওঠার আগেই একটি ছেলে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর উপরে। হাতাহাতির মধ্যেই বসন্তের চোখে পড়ে, দু’টি ছেলে একটি মেয়েকে যৌন হেনস্থার চেষ্টা করছে। মেয়েটি নেশায় তখন আচ্ছন্ন। এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই এক জন একটি মোটা পাটের দড়ি দিয়ে গলা জাপটে ধরে তাঁর। বসন্ত যত ছাড়ানোর চেষ্টা করেন, দড়িটা তত গলায় জাঁকিয়ে বসে। এর মধ্যেই মেয়েটি কোনও রকমে অন্য দু’ ছেলের হাত ছাড়িয়ে রাস্তা থেকে একটি অটোরিকশা চালককে ডেকে আনেন। ওই ব্যক্তি এসে তিন জনকে ধরে উদম পেটান। তার পরে ওই তিন যুবক পালিয়ে যায়। এর মধ্যেই ফেসবুকে পুরো ঘটনার আপডেট দিয়ে ফেলেছেন বসন্ত। ঘটনার আধ ঘণ্টা পরেও ওই এলাকায় পুলিশের দেখা মেলেনি বলেই আফশোস তাঁর।

Advertisement

সংবাদমাধ্যমের কাছে বসন্ত জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে ঠিক কী করণীয় তার জন্য আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। বসন্তের কথায়, ওই তিন জন দক্ষিণের কোনও রাজ্যের নয়। কারণ তাঁরা দক্ষিণী কোনও ভাষায় কথা বলছিলেন না। তাঁদের হিন্দিতেও টান ছিল।

এক মাস আগেই চেন্নাইয়ের রেলস্টেশনে খুন হয়েছিলেন তথ্য-প্রযুক্তি কর্মী এস স্বাতী। তাঁর বাবার অভিযোগ ছিল, সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। তবে এ দিনের ঘটনায় নজির সৃষ্টি করে বসন্ত বার্তা দিলেন, থালাইভার রাজ্যে এখনও ‘রিয়েল-লাইফ হিরো’ও আছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement