ওড়িশার ভদ্রক এবং কেন্দ্রপাড়ায় শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। — ফাইল চিত্র।
মৌসম ভবনের শেষ বুলেটিন অনুযায়ী, ওড়িশার পারাদ্বীপ উপকূল থেকে এখনও ৪৫০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে রয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’। এর মধ্যেই বুধবার দুপুরে ওড়িশার ভদ্রক এবং কেন্দ্রাপড়ায় শুরু হয়ে গেল ভারী বৃষ্টি। ইতিমধ্যে সক্রিয় হয়েছে রাজ্যের প্রশাসন। ওড়িশার উপকূলবর্তী ১৪টি জেলার ৩০০০ গ্রাম থেকে লাখ লাখ মানুষকে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার বন্ধ রাখা হয়েছে ভুবনেশ্বরের নন্দনকানন চিড়িয়াখানা। আগামী রবিবার, ২৭ অক্টোবর ওড়িশার সিভিল সার্ভিস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। সেই পরীক্ষাও পিছিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সাত দিন পর পরীক্ষার পরবর্তী দিন ঘোষণা করা হবে।
মৌসম ভবনের শেষ বুলেটিন বলছে, শেষ ছ’ঘণ্টায় পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার বেগে উত্তর-পশ্চিম দিকে সরেছে ঘূর্ণিঝড়। এই মুহূর্তে তার অবস্থান পারাদ্বীপ থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব, ধামারা থেকে ৫২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্ব, সাগর দ্বীপ থেকে ৫৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্ব। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রূপেই স্থলভাগে প্রবেশ করতে চলেছে ‘ডেনা’। ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারের মধ্যবর্তী এলাকায় শুক্রবার সকালের মধ্যে হতে পারে ‘ল্যান্ডফল’। এর মধ্যেই ওড়িশার ভদ্রক এবং কেন্দ্রপাড়ায় শুরু হয়ে গিয়েছে ভারী বৃষ্টি। মৌসম ভবনের আবহবিদ উমাশঙ্কর দাস এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, ‘‘পারাদ্বীপে বসানো র্যাডারের তথ্য বলছে, ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’-র আউটার ব্যান্ড ভদ্রক এবং কেন্দ্রপাড়া জেলার ভূমি স্পর্শ করেছে।’’ কোনও স্থান থেকে ঘূর্ণিঝড় যখন ৫০০ কিলোমিটার দূরে থাকে, তখন তার ‘আউটার ব্যান্ড’ (বহির্বলয়) ওই স্থানকে স্পর্শ করে ফেলে। মূলত মেঘ দিয়ে তৈরি হয় বহির্বলয়, যার প্রভাবে ওই এলাকায় ভারী বৃষ্টি হয়। সে কারণেই ভারী বৃষ্টি হচ্ছে ভদ্রক এবং কেন্দ্রাপড়ায়।
গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
মৌসম ভবন বলছে, ঘূ্র্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃহস্পতি এবং শুক্রবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে। ওই দু’দিন ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বরের নন্দনকানন চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। সিমলিপাল ব্যঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র এবং ভিতরকণিকা জাতীয় উদ্যান বন্ধ রাখার ঘোষণা আগেই করেছে প্রশাসন। বুধ এবং বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকছে সেগুলি। রাজ্যের মৎস্য এবং প্রাণীসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী গোকুলানন্দ মল্লিক রাস্তার কুকুর, বিড়াল, গরুদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে অনুরোধ জানিয়েছেন। রাস্তার পশুপাখি ঝড়ের কারণে আহত হলে হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে জানাতে বলেছেন তিনি। সে ক্ষেত্রে ১৯৬২-তে ফোন করতে হবে।
গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন