সামান্য বোতাম নিয়ে দ্বৈরথ!
কথা বলার সময়ে তাঁর জামার উপরের দু’টি বোতাম খোলা থাকে। শিষ্টাচার বলে তো একটা ব্যাপার আছে!— রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান অশ্বিনী লোহানি সম্পর্কে এমন অভিযোগ তুলেছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছেও লোহানির বিরুদ্ধে নালিশ করতে ছাড়েননি।
পীযূষ ৫৬। অশ্বিনী ৫৯। এহেন প্রবীণ দুই দুঁদে রেলকর্তার দ্বৈরথই এখন হয়ে উঠেছে মুখোরোচক খবর। যদিও রেল ভবনের সূত্র বলছে, সমস্যা আসলে জামার বোতামে নয়। সমস্যাটা ফাইলের ঘেরাটোপে। রেলমন্ত্রী হয়েই পীযূষ হুঙ্কার দিয়েছিলেন, ডু ইট নাও। এখনই সব ক্লিয়ার করুন। চেয়ারম্যান বলছেন, দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতির অপটিক্যাল ফাইবারের ফাইলে রয়েছে অনেক জটিলতা। প্রযুক্তিগত সব ছাড়পত্র না এলে সেই ফাইল ছাড়া যাবে না।
বিরোধ এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁর পরামর্শ, রেল মন্ত্রকের দুই শীর্ষকর্তা যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করে ঐক্যের বার্তা দিন। যাতে রেল মন্ত্রক নিয়ে বাইরে বিরূপ বার্তা না যায়। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ও পীযূষকে জানিয়েছে, রেলকর্তার ‘ইগো’ থাক না থাক নির্বাচনের মুখে মন্ত্রী-রাজনীতিকের ‘ইগো’ শিকেয় তুলে রাখা প্রয়োজন। এর পর থেকেই বিরোধের গুঞ্জন হেসে উড়িয়ে দিচ্ছেন পীযূষ। এখন তাঁর বক্তব্য, ‘‘রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের মতো দক্ষ প্রশাসক হয় না। সংবাদমাধ্যম সব সময় গল্পের গরু গাছে তোলে।’’
প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের এক কর্তা এখন নিয়মিত গিয়ে রেল ভবনের কর্তার সঙ্গে বৈঠক করে প্রতিটি ফাইল নিয়ে আলোচনা করছেন। এটা তবে কিসের ইঙ্গিত?
প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্ত প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্রের কাছে চেয়ারম্যানকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এবং তিনি সেই বৈঠক শুরুও করে দিয়েছেন। তবে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানকে সরানো হবে না। কারণ, অশ্বিনী দক্ষ অফিসার। রেল বোর্ডে বিভিন্ন বিভাগের বোর্ড মেম্বার বা সচিব রয়েছেন ছ’জন। বোর্ডের চেয়ারম্যান এঁদের সকলের মাথায় এবং তিনি প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির সমতুল। ছ’জন বোর্ড কর্তা বা সচিবের মতপার্থক্য থেকে ঐকমত্য তৈরি করা মোটেই সহজ কাজ নয়। যেমন ঠাট্টা করে বলা হয়, মেকানিক্যাল ও ইলেকট্রিক্যাল বোর্ড মেম্বারকে একমত করাটা শিবের অসাধ্য। সেই কাজেও সফল হয়েছেন অশ্বিনী। একসুর এখন পীযূষও!