ঝড় তুলতেই রাজ্য সফরের ছক রাহুলের

কর্নাটক বিধানসভার ভোট দোরগোড়ায়। কিন্তু দক্ষিণের এই রাজ্য ছাড়াও ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে রাহুলের নিশানায় রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, গুজরাত, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশ।

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৫০
Share:

রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।

সংসদের বাজেট অধিবেশন শেষ হলেই রাজ্যওয়ারি সফরে বেরোচ্ছেন রাহুল গাধী।

Advertisement

কর্নাটক বিধানসভার ভোট দোরগোড়ায়। কিন্তু দক্ষিণের এই রাজ্য ছাড়াও ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে রাহুলের নিশানায় রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, গুজরাত, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশ। দ্বিতীয় স্তরের অগ্রাধিকার রাজ্যগুলি হল ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়, হরিয়ানা, দিল্লি আর উত্তরাখণ্ড। নরেন্দ্র মোদীর বিজেপির বিরুদ্ধে ২০১৯-এ জোট গড়তে তৎপর কংগ্রেস সভাপতি। এক প্রশ্নের জবাবে রাহুল বলেন, ‘‘২০১৪ আর ২০১৯ এক নয়। চার বছরেই মানুষ মোহমুক্ত। রাজস্থানে উপনির্বাচনের ফল আর গুজরাতে মানুষের বিদ্রোহ দেখেই সেটা টের পাওয়া যাচ্ছে।’’

দলের রণকৌশল ঠিক করতে সম্প্রতি বেশ কয়েক বার বৈঠকে বসেছেন রাহুল। ২০১৪-য় শাসক দলে থেকে ভোটের সময়ে কংগ্রেস যে সব ভুল করেছিল, তা শুধরে নিয়ে এখন থেকেই জনসংযোগ সংস্থার মাধ্যমে প্রচারের কৌশল ঠিক করছেন তিনি। সে বারের ভোটে ইউপিএ–র বিরুদ্ধে মোদীই হয়ে উঠেছিলেন প্রধান বিরোধী মুখ। এ বার বিরোধীদের জোট গড়ার আগে সেই ভূমিকাতেই দেশের সামনে আসতে চাইছেন রাহুল।

Advertisement

রাহুলের রণনীতি ঠিক করতে বিশেষ ভূমিকা নিচ্ছেন যিনি, সেই স্যাম পিত্রোদার মন্তব্য, ‘‘২০১৪ সালে মোদীর হাতিয়ার ছিল ইউপিএ-র বিরোধিতা। আর এখন মোদী জমানার পাঁচ বছরকেই বিচার করবেন মানুষ। ২০১৯-এর ভোট তার ভিত্তিতেই হবে। তবে শুধু মোদী নয়, রাহুল মনে করেন, প্রচারে বিজেপির রাজ্য সরকারগুলির কাজকর্মেরও তীব্র সমালোচনায় নামতে হবে।’’ বিজেপি এখন মোট ১৯টি রাজ্যে ক্ষমতায়। তাই লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে ওই রাজ্যগুলিতে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষকে মূলধন করতে চান রাহুল। বিজেপি চাইছে ভোটকে মোদী-কেন্দ্রিক করে তুলতে। কারণ, ২০১৪ সালে যতটা মনমোহন সরকার বিরোধী অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল, মোদীর বিরুদ্ধে এখনও তেমন জোরালো ঝড় ওঠেনি। আর মোদী-ম্যাজিক ধাক্কা খাওয়ার পরে, পরিস্থিতি সামলাতে তাঁর ম্যানেজাররাও ‘অনলাইন রেপুটেশন ম্যানেজমেন্ট’ শুরু করে দিয়েছেন।

রাহুল মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, অন্ধ্র, কেরল, তেলঙ্গানা ও অসমে বিজেপির স্থিতাবস্থাই থাকবে, উন্নতির সম্ভাবনা নেই। গত লোকসভায় উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে এনডিএ পেয়েছিল ৭৩টি (বিজেপি-৭১)। এ বার সংখ্যা আর বাড়ানো অসম্ভব। উল্টে যোগী সরকারের বিরুদ্ধেও অসন্তোষ রয়েছে। বিহারে ৪০টি আসনের ২০টি পেয়েছিল বিজেপি। নীতীশ কুমার এ বার আরও বেশি আসন চাইবেন। গুজরাতে হার্দিক পটেল-জিগ্নেশ রাহুলের সঙ্গে এখনই অঙ্গীকারবদ্ধ, তেমনি উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ যাদব। রাজস্থানে ২৫টি আসনে বিজেপির ২৫। সেখানে ধস অবশ্যম্ভাবী। মধ্যপ্রদেশে ২৯টির মধ্যে বিজেপির ছিল ২৭টি। এ বার তারা ঝড়ের মুখে।

রাহুলের লক্ষ্য, ১৯৭৭ ও ’৮৯ সালে যেমন ইন্দিরা আর রাজীবের বিরুদ্ধে কংগ্রেস-বিরোধী ভোট একজোট করা সম্ভব হয়েছিল, ২০১৯-এ সেই পরিস্থিতি তৈরি করা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement